২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৫৬

‘বিষফোঁড়া’ ভাঙার কাজ শুরু, লাগবে ছয় মাস

রাজধানীর হাতিরঝিলে গড়ে তোলা ‘বিষফোঁড়া’ খ্যাত বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙার কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।বুধবার সকালে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন গণপূর্তমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হাতিরঝিল প্রকল্পের বিষফোঁড়া খ্যাত বিজিএমইএ ভবন অত্যাধুনিক ডিভাইস দিয়ে ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলাম। ভবন ভাঙতে প্রথমবারের মতো ডিনামাইটের ব্যবহারের চিন্তা ছিল আমাদের। তবে পরিবেশের কথা আর এ ভবনের পাশে গড়ে ওঠা পাঁচতারকা হোটেলের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ডিনামাইট ব্যবহারের চিন্তা থেকে সরে এসেছি। এখন পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে সনাতন পদ্ধতিতে (শাবল-হাঁতুড়ি) দিয়ে ভবন ভাঙার কাজটি পরিচালিত হবে। এতে আমরা এ ভবন ভাঙার কাজ যে প্রতিষ্ঠানকে (ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজ) দিয়েছি তাদেরকে ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দুটি টিম তাদের কাজ দেখভাল করবে, প্রতিটি দিনে তারা থাকবে। ছয় মাসের মধ্যেই তাদের কাজ শেষ করতে হবে।’

রেজাউল করিম বলেন, ‘হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে শুধু বিজিএমইএ ভবন নয়, যত অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে। আমরা চাই হাতিরঝিলে পানির গতি বৃদ্ধি পাক, সুন্দর ঢাকা গড়ে উঠুক।’

হাতিরঝিলের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভবন ভাঙার পর যেসব বর্জ্য জমা হবে প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে সাময়িক রাখবে। পরে সেগুলো শহরের বাইরে ফেলে দেওয়া হবে। আমরা শুধু বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু করছি না, হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে।’

আগামী সোমবার থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নসরুল্লাহ খান রাশেদ। ভবন ভাঙতে ব্যবহার করা হবে বুলডোজার, এক্সেভেটর, শাবল ইত্যাদি।

এসময় ফায়ার সার্ভিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, রাজউক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএ’র বর্তমান ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এরপর রাজউক ভবনটি ভাঙার দরপত্র আহ্বান করে। ভবনটি ভাঙতে কাজ পায় ‘সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দরপত্র ছিল এক কোটি ৭০ লাখ টাকার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ায় সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স। ওই সময় সরে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে টাকা কেটে নেয় রাজউক। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফোর স্টার’ গ্রুপকে কাজ দেয় রাজউক। তাদের দরপত্রে টাকার পরিমাণ ছিল এক কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এখন তারা এক কোটি দুই লাখ টাকায় ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করবে।

প্রকাশ :জানুয়ারি ২২, ২০২০ ৪:৫১ অপরাহ্ণ