থানা হেফাজতে এফডিসির ফ্লোর ইনজার্চ আবু বকর সিদ্দিকীর মৃত্যুতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তার সহকর্মীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এফডিসির সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মিছিল করেন তারা।
থানা হেফাজতে নির্যাতন করে আবু বকরকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসির ফাঁসি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। রাস্তা বন্ধ করে অবরোধের কারণে হাতিরঝিল থেকে কারওরান বাজার সড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে আবু বকর ঢাকা সিটি নির্বাচনের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের চিঠি পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে তার সহকর্মীরা। সহকর্মীরা জানান, বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ফ্লোর ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন আবু বকর সিদ্দিকী। শনিবার সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ তাকে আটক করে। রোকসান আক্তার মায়া নামে এক নারী তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেখানেই পুলিশি নির্যাতনে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন আবু বকর। এসময় তাকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) ইফতেখার ইসলাম অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনরা বলছেন, আবু বকরের গলায় কালো দাগ ও শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
আন্দোলনরত এফডিসির কর্মচারী ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজা বেগম ঢাকাটাইমস বলেন, ‘আমাদের কথা একটাই; কেন আবু বকরকে থানা হেফাজতে মরতে হলো? আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। তাকে (বকর) পুলিশ গ্রেপ্তার করছে শনিবার কিন্তু যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে সেটা হয়েছে একদিন পর (রবিবার)। তার মানে পুলিশ তাকে হত্যা করে নতুন নাটক সাজিয়েছে।’
‘থানায় কম্বল পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু তার গলায় একটা চিকন দাগ রয়েছে। তার মানে এটা পরিকল্পিত হত্যা।’
ফিরোজা বলেন, ‘ঘটনার দিনেও সে (বকর) ডিউটি শেষ করে আমাদের সঙ্গে দেখা করে বাসায় ফিরছিল। তারপরই শুনলাম সে মারা গেছে।’
আন্দোলনরত জামাল শেখ নামে একজন বলেন, ‘আমাদের সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করতে হলে অনুমতি লাগে। পুলিশ কেন তা নিল না? আর আমরা তো জানি থানার কাস্টরিতে ফাঁসি দেবার মতো কোনো অবস্থা থাকে না। এছাড়া সেখানে সিসিটিভি থাকার কথা। তারপরও কীভাবে সে গলায় ফাঁস নিলো?’
খাদেজা বেগম নামে একজন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন থেকে ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি নির্বাচনের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের চিঠি পেয়েছিলেন আবু বকর। তার ডিউটি করার কথা ছিল শেওড়াপাড়ায়।’