অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হচ্ছে সেই মায়ের। চাঁপাইনবাবগঞ্জে রহনপুর রেলস্টেশনে তাকে ফেলে দিয়েছিলেন স্বজনরা। যদিও শতবর্ষী ওই বৃদ্ধা তার নাম পরিচয় বলতে পারছেন না।
ময়মনসিংহের ভালুকার সাড়া মানবিক সংস্থার এক বৃদ্ধাশ্রমে তাকে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে সংস্থাটি। বৃদ্ধাশ্রমে নেওয়ার অনুমতিও মিলেছে। আরেকটু সুস্থ হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এখনো তার স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২৯ ডিসেম্বর রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মের পাশের একটি তেঁতুল গাছের নিচে ওই বৃদ্ধাকে ফেলে রেখে যায় দুই ব্যক্তি। স্টেশনে ১৪ দিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে ছিলেন তিনি। কয়েকজন হৃদয়বান মানুষের চেষ্টায় গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাকে।
গত ১৬ জানুয়ারি সাড়া মানবিক সংস্থার (সামাস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল মালেক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক নুরুল হকের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ওই মাকে বৃদ্ধাশ্রমে নেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আরো কয়েকদিন হাসপাতালে রাখার পর বৃদ্ধাশ্রমে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন মালতি বেগম নামে এক নারীকে দায়িত্ব দিয়েছিল অসহায় মাকে দেখভালো করার। কিন্তু তার সেবা যত্ন করতে গিয়ে মায়ায় পড়ে যান তিনি। ভালোবেসে ফেলেন ওই মাকে।
মালতি বেগম এখন ওই মাকে ছাড়তে নারাজ। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে যেতে দেব না। তুমি থাকবা আমার কাছে।’
চিকিৎসকরা বলছেন, ‘বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো বেশ দুর্বল। তাই আরো কয়েকদিন এখানে থাকা প্রয়োজন।’
চিকিৎসকরা জানান, আগে কিছুই খেতে চাইতেন না। এখন নিজে থেকেই খেতে চাইছেন। ঠিকানা কোথায় জানতে চাইলে কখনো ঈশ্বরদী, কখনো যশোর আবার কখনো খুলনার কথা বলছেন।
তার দায়িত্ব নেন রহনপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তৌহিদুল ইসলাম ও পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) নুরুন্নবী।