আনন্দমেলা চলচ্চিত্রের ব্যানারে নির্মিত এই সিনেমা দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে। তৈরি করেছে ঢালিউডের শীর্ষ আয় করা সিনেমার ইতিহাস। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ও অঞ্জু ঘোষ অভিনীত এ চলচ্চিত্রটির দুই প্রযোজক মতিউর রহমান পানু ও আব্বাস উল্লাহ শিকদার।
গতকাল ১৮ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫ টায় মৃত্যু বরণ করেন আব্বাস উল্লাহ। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আব্বাস উল্লাহকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। কারণ তিনি আমার স্বজন, বন্ধু, ভাই, অভিভাবক, শুভাকাঙ্খি ছিলেন। আমার স্ত্রী যখন মারা যায়, তখন আমি দিশেহারা হয়ে যাই। সবকিছু এলোমেলো ছিল। ওই মুহূর্তে তিনি আমার পাশে ছায়ার মত দাঁড়িয়েছিলেন। আমার স্ত্রীর জন্য বনানীতে উনি কবর কিনেছিলেন। সেই সময় তার পাশেই আমার জন্যও কবরের জায়গা কিনে রেখেছেন। আমার শেষ ঠিকানার স্থান কিনে রেখেছিলেন। আজ সেই মানুষটা নেই, তাকে কবরস্থানে নিয়ে যেতে হবে!’
ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে অসংখ্য সিনেমায় পাঠ গেয়েছি। আমি কখনই তাকে রাগ করতে দেখিনি। সবসময় হাসি মুখে থাকতেন। আব্বাস উল্লাহর মত লোক চলচ্চিত্রে আসছেন বলেই বেদের মেয়ে জোসনার মত ইতিহাস হয়েছে। তাদের কারণে আমিও একটি ইতিহাস হয়েছি। তার মৃত্যুতে আমি শোকাহত, মর্মাহত। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন। তার পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইলো।’
গতকাল বিকেলে বনানীর নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আব্বাস উল্লাহ। সোমবার বাদ আসর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ির মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
আব্বাস উল্লাহর বাবা ছিলেন সাবেক বনানী পৌরসভার চেয়ারম্যান। তার নামেই রাজধানীর বনানীতে চেয়ারম্যান বাড়ির নামকরণ করা হয়। চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দমেলা চলচ্চিত্রের একজন কর্ণধার আব্বাস উল্লাহ। মতিউর রহমান পানুর সঙ্গে যৌথভাবে এ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন তিনি।
আনন্দমেলা চলচ্চিত্রের ব্যানারে ‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘পাগল মন’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘জ্বী হুজুর’সহ অনেক দর্শকপ্রিয় সিনেমা নির্মিত হয়েছে। প্রযোজনার পাশাপাশি অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছেন আব্বাস উল্লাহ।