পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে সেনা সদস্য হত্যাকাণ্ড মামলার রায় প্রকাশ হতে যাচ্ছে আজ।
এ মামলায় নিম্ন আদালত ১৫২ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন। তবে হাইকোর্ট এর মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায়ে এরই মধ্যে স্বাক্ষর করেছেন।
মঙ্গলবার যেকোনো সময় এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর এ মামলায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এছাড়া, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চার জনকে খালাস দেন আদালত। একজন মারা গেছেন। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলীসহ ১২ জনকে খালাস দেন আদালত। এর মধ্যে দুজন মারা গেছেন।
এছাড়া, বিচারিক আদালতে তিন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫৬ আসামির মধ্যে ১২৮ জনকে ১০ বছর, আটজনের সাত বছর, চারজনকে ৩ বছর এবং দুই জনকে ১৩ বছর সাজা দেওয়া হয়। ২৯ জন খালাস পান। ২৮ জন আপিল করেননি। মারা গেছেন তিনজন।
এদিকে নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের মধ্যে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। চারজনকে দেন ৭ বছর কারাদণ্ড।
২০১৫ সালে এ মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। এই বেঞ্চে ৩৭০ কার্যদিবস আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কাছে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বিডিআরের প্রাক্তন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপি দলীয় প্রাক্তন সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়।