২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৪৭

চাল ও সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। একই সঙ্গে শাক-সবজি ও কাঁচাবাজারের প্রতিটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। হঠাৎ দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় ফসলের মাঠের ক্ষতি হওয়ায় রাজধানীর বাজারে পণ্যের সরবরাহ কমে গেছে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ মেরাদিয়া, রামপুরা, বনশ্রী, শাহজাহানপুর, মালিবাগ, শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ঢাকা মহানগরীর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজার দরে দেখা গেছে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। তবে বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে সাধারণ মানের নাজির বা মিনিকেট চাল বিক্রি হতো ৪৮-৫৬ টাকা, যা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৭ টাকায়।

এ ছাড়া সরু চাল ৫০ টাকা, পাইজাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা; মোটা চাল, স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের চালে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা বেশি।

মাছ ও মাংসের বাজারেও অস্থিরতা। টিসিবির নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবি নির্ধারিত মূলে প্রতিকেজি রুই মাছ ২০০ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। ৭০০ টাকার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, গরুর মাংস ৪৭০ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা, খাসির নির্ধারিত মূল্য ৬৫০ টাকার বিপরীতে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, ১৪০ টাকার মুরগি (ব্রয়লার) বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা এবং দেশি মুরগি ৩৫০ টাকার বিপরীতে বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।

শাক-সবজির বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। কারওয়ান বাজারে পাইকারি প্রতিকেজি লতি ৪০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। শশা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, ৪০ টাকার কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। এ ছাড়া জিঙ্গা, পটল, বেগুন, করলা, টমেটো পাইকারি বাজারে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে এসবের মূল্য ৬০ টাকা।

মসুর ডাল প্রতিকেজি ৭৫-১৩৫ টাকা, তুরস্ক ও কানাডিয়ান বড় ডাল ৭৫-৮৫ টাকা, মাঝারি ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি ডাল ১১০-১২০, নেপালি ডাল ১৩০-১৩৫, মুগডাল ১০০-১২০, ছোলা ৮৫-৯০, আলু ১৫-২০ টাকা ও অ্যাংকর ডাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।

রসুন, লবণ ও চিনিতে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা রসুন (মানভেদে) প্রতি কেজি ২১০-২৩০, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০-২২০ টাকায়। দেশি রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৩০, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০-১২০। আয়োডিন যুক্ত প্যাকেট লবণ (মানভেদে) প্রতি কেজি ২৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৫-৩৮ টাকায়। এ ছাড়া চিনি ৬৫-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬২-৬৫ টাকায়।

তবে মসলার বাজার অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি পেয়াজ ২৫-৩০ টাকা, ভারতীয় পিয়াজ ২০-২৫ টাকা,  রসুন ১০০-২৩০ টাকা, শুকনা মরিচ ১৫০-২০০ টাকা, হলুদ ১৬০-২০০ টাকা, আদা ৬০-৯০ টাকা, দারুচিনি ৩২০-৩৬০ টাকা, এলাচি ১,২০০-১৫০০ টাকা, ধনিয়া ১২০-১৫০ টাকা ও তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৬০ টাকায়।

আটা ও ময়দার দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। এ সপ্তাহে আটা ৩০-৩২ টাকা, ময়দা (খোলা) ৩৪-৩৬, ময়দা (প্যাকেট) ৪০-৪২ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ভোজ্য তেলের দামও অপরিবর্তি রয়েছে। খুচরা বাজারে সয়ারিবন তেল (খোলা) প্রতিকেজি ৮২-৪৮ টাকা, সয়াবিন তেল (বোতল) ৫ লিটার ৪৯০-৫২০ টাকা, ১ লিটার ১০০-১০৬ টাকা, পাম অয়েল (খোলা) ৭০-৭২ টাকা, পাম অয়েল (সুপার) ৭৪-৭৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে মেরাদিয়া বাজারের বিক্রেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, রাজধানীর প্রধান পাইকারি বাজারে (কারওয়ান বাজার) প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। পাল্লাপ্রতি (৫ কেজি) ১৫-২০ বেশি। এখন আমাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সেখানে (কারওয়ান বাজার) যখন দাম কমবে আমরাও কম দামে বিক্রি করব। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি পণ্যে কেজিতে কমপক্ষে ৫ টাকা করে বেড়েছে।

প্রকাশ :মে ৬, ২০১৭ ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ