২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:০৪

দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে রাজধানীর সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

অনেক প্রতীক্ষার সেই প্রকল্প মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মহানগরের ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নতুনভাবে সাজানো হবে। আর পূর্বাচলে ১১টি এবং উত্তরায় ৩টিসহ মোট ১৪টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। এক হাজার ১৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি শুরু হবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে এক হাজার ১৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানী ঢাকার ৩৪২টি স্কুলে নতুনভাবে সংস্কার কাজ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় উত্তরা ও পূর্বাচলে ১৪টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দৃষ্টিনন্দন করতে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজধানীর যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ বা আধুনিক করার সুযোগ নেই, সেগুলোকে কাছাকাছি কোনও বড় পরিসরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে। সব বিদ্যালয়ে তৈরি করা হবে খেলার মাঠ। প্রতিটি বিদ্যালয়কেই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়া হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর ১৫৪টি বিদ্যালয়ের ২ হাজার ৯৭৫টি কক্ষ নতুনভাবে নির্মাণ ও দৃষ্টিনন্দন করা হবে। আর ১৭৭টি বিদ্যালয়ের এক হাজার ১৬৭টি কক্ষের অবকাঠামো উন্নয়নসহ সৌন্দর্য বাড়ানো হবে। প্রকল্পের আওতায় মোট দুই লাখ শিশু শিক্ষার্থীর জন্য শিশুবান্ধব শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৪ হাজার ১১২টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে রয়েছে ৩৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬ হাজার ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এছাড়া, অস্বস্তিকর পরিবেশে ৩৯ হাজার ৬১৪টি জরাজীর্ণ ভবনে লেখাপড়া করছে শিশুরা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের আগের সরকারি প্রাথমিকের পাকা স্কুলগুলোর অবকাঠামো মাত্র ৪৭ শতাংশ ভালো পর্যায়ে রয়েছে। মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে ২৩ শতাংশ স্কুল। আর খারাপ পর্যায়ে রয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। তবে ২৩ শতাংশ স্কুলের অবস্থা একেবারেই নাজুক। সেমিপাকা স্কুলগুলোর মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ ভবন ভালো আছে। প্রায় ১৮ শতাংশ স্কুলের অবকাঠামো মাঝামাঝি মানের। খারাপ পর্যায়ে রয়েছে ২১ শতাংশ স্কুলের ভবন। আর সেমিপাকা ৫৪ শতাংশ স্কুল একেবারেই ব্যবহারের অযোগ্য।

রাজধানী ঢাকার ৩৪২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া, পুরান ঢাকাসহ পাশের এলাকায় ১২টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৩০ জন করে। একটি কক্ষের মধ্যে চলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯ ২:৩৯ অপরাহ্ণ