মির্জা ফখরুল বলেন, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আজকে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশে নয়, সমগ্র উপমহাদেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে।
গত ১০ ডিসেম্বর ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাব ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। পরে সেটি দেশটির উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয়। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়।
আইনটিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা ছিল, অন্তত ১১ বছর ভারতে থাকলে তবেই কোনো ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সংশোধনে ওই সময় কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে তাতে বাইরে থেকে আসা মুসলিমদের কথা বলা হয়নি।
ওই আইনের প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে ভারতের বিভিন্ন অংশে। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনজন। শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে রাজধানী দিল্লিতেও।
মির্জা ফখরুল বলেন, নাগরিকত্ব তালিকার (এনআরসি) পর সিএবি পাসের জেরেও ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিলটি বাতিলের দাবি শুরু থেকেই উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইন হয়ে গেলো। এই ধরনের আইন উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি উসকে দেবার পাশাপাশি সংঘাত সৃষ্টি করবে।
‘আমরা উপমহাদেশে সবাই মিলেমিশে বসবাস করি। সবার মধ্যে একটা সম্প্রীতি রয়েছে। কিন্তু ভারতের সরকার শুধু ভারতে সমস্যা সৃষ্টি করবে না, উপমহাদেশে সংঘাত সৃষ্টি করবে।–যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, এনআরসির বিষয় নিয়ে আমরা প্রথম থেকে বলছি যে এই বিষয় নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এনআরসি আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে আমরা মনে করছি।
উপমহাদেশের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, উদারপন্থী রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে একটা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস করা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের সামনে মন্তব্য করেন ফখরুল।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কামরুজ্জামান রতন, আমিনুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, নাজিম উদ্দিন আলম, খন্দকার মারুফ হোসেন, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, আবুল বাশার, আনোয়ার হোসেন, আহসান উল্লাহ হাসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দলটির অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।