কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চানপুর গ্রামের ওয়েজ উদ্দিন ওরফে ফটিক হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও আসামিদের আপিল গ্রহণ করে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
পরে ডিএজি বশির উল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ডাকাতদের ধরিয়ে দেওয়ার কারণে আসামিরা সম্মিলিতভাবে ঈদের আগের দিন ওয়েজ উদ্দিন ওরফে ফটিককে হত্যা করে। হত্যা মামলাটিতে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত শরীফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। বাকি পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল আদালত। এ মামলায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসে। এছাড়া আসামিরা আপিল করেন। পরে শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ রায় দেন।
রায়ে আদালত ডেথ রেফারেন্স রিজেক্ট করে আসামিদের আপিল গ্রহণ করেন। ফলে শরীফের আর মৃত্যুদণ্ড হবে না। তিনি বেকসুর খালাস পান। আর যারা যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছিলেন তারাও খালাস পান।
খালাস কেন হলো জানতে চাইলে বশির উল্লাহ জানান, প্রসিকিউশন বা বাদীপক্ষ মামলাটিতে সঠিকভাবে সাক্ষ্য দিতে পারেনি। একজন আসামি আলমগীর তিনি বক্তব্য দিলেও সেটি ছিল নিজেকে না জড়িয়ে। যেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
তবে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার চানপুর গ্রামে ওয়েজ উদ্দিন ওরফে ফটিককে বিগত ২০০৮ সালের ১ অক্টোবর রাতে অপহৃত হয়।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর ৮ অক্টোবর চানপুর এলাকার ফাইন ফুড ফিসারি থেকে তার মস্তকবিহীন লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় ফটিকের ভাই মইন উদ্দিন কটিয়াদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ মামলার আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদকালে আলমগীর হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
এরপর ২০১৪ সালের ২৯ জুন বিচারিক আদালত এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামি শরীফকে মৃত্যুদণ্ড এবং জামিল, সোলেমান, নূর মোহাম্মদ, সাদেক এবং আলমগীরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আসামিদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ ও আলমগীর পলাতক।