মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে গত শনিবার রাজধানীতে সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। তবে এদিন যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস থাকায় পুলিশের অনুমতি পায়নি দলটি। পরদিন নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আর সভা-সমাবেশের অনুমতি নেব না। যখন প্রয়োজন হয় করব।
এর একদিন পর সচিবালয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের কাছে এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ করার শক্তি ও সাহস বিএনপির নেই।
সরকারি দলের মুখপাত্রের এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তারা এখন নিজেদেরকে প্রভু ভাবতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রের প্রভু তারা, এটাই তাদের সমস্যা হয়ে গেছে। সবকিছু তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। ভিন্ন একটা রাজনৈতিক দল কীভাবে চলবে এটাও তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। অথচ সংবিধানে খুব পরিষ্কারভাবে সব দলকে সভা-সমাবেশ ও প্রতিবাদ করার অধিকার দেয়া আছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সভা-সমাবেশ করার অনুমতি চাই না, আমরা অবগত করি। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করলে পিডাব্লিউডি, সড়কে করলে পুলিশের কাছে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এই সরকার যেটা করছে সেটা গ্রাম্য মোড়লের কায়দায়। সরকার অনুমতি দিতে টালবাহানা করে থাকে। সভা সমাবেশের দুই ঘণ্টা আগে অনুমতি দিয়ে থাকে। এতে সমাবেশ সফলভাবে করা খুব কঠিন।’
ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল করে প্রভু বনে গিয়েছিল। আবার এখন তো ১০ বছরে ধরে দেশে প্রভুত্ব করছে। এখন তারা পাকাপোক্ত প্রভু হিসেবে বসতে চায়। যেটা তাদের মানসিকতার সমস্যা। গণতান্ত্রিক চেতনা তাদের মধ্যে নেই। তারা নিজেদের রাজা বাদশা ও প্রভু ভাবতে শুরু করেছে।’
সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়। তাই অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।’
সরকারের বিরুদ্ধে দলীয়করণের অভিযোগ এনে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে মাঠ পর্যায়ে নিজস্ব লোকজনকে নিয়োগ দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করলেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি নূরে সাহাদাত স্বজন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূর করিমসহ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।