২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:০৩

চাঁদপুরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি : চাঁদপুরে মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি আল আমীন শিশুসদন (এতিমখানা) কমপ্লেক্সের ভবনের ফ্লোর ধসে অন্তত ৪৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতরা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর জেলা সদর হাসপাতাল, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন। শনিবার রাত ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ফরাজীকান্দি দরবার শরিফের পীরজাদা আল্লামা মাসউদ আহমদ জানান, এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ তিন তলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সেখানে সবধরনের শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে।

আল আমিন এতিমখানার আবাসিক কর্মকর্তা শাহান শাহ সেলিম জানান, মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি উয়েসিয়া কামিল মাদ্রাসার এতিমখানার ছাত্ররা ১৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে শনিবার রাতে শিক্ষকদের সঙ্গে সভা করছিল। রাত ১০টায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওজন সইতে না পেরে তিন তলা বিশিষ্ট ভবনের দ্বিতীয় তলা বারান্দার ফ্লোর ধসে পড়ে। এতে দ্বিতীয় তলায় থাকা শিক্ষার্থীরা নিচতলায় পড়ে গুরুতর আহত হয়।

মাদ্রাসার ছাত্র ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আহত ছাত্রদের উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে দমকল কর্মী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মাদ্রাসার ফাযিল প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন ও হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আল হাসান বলেন, মাদ্রাসার এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় আমরা এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি বসবাস করছি। ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী মানছুর আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই এলাকাবাসী দুর্ঘটনার শিকার ছাত্রদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। তিনি জানান, ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এখানে নতুন করে ভবন তৈরি করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিরাপদে শিক্ষাদানে নতুন ভবন তৈরির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবন নির্মাণে কোনো ধরনের নিয়মনীতি ছিল না। বসবাসের অনুপযোগী তিন তলা ভবনটিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হবে।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, দুর্ঘটনার খবর জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আহত শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার তিনতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

এদিকে চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, মাদ্রাসাটি এই অঞ্চলের প্রাচীন ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতিমখানার ভবনটি জরাজীর্ণ ছিল। এখানে সরকারিভাবে ভবন করার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া এতিমদের জন্য অস্থায়ীভাবে টিনসেট করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১০ বান্ডিল ঢেউটিন, ৩০ হাজার টাকা ও ৫০টি কম্বল দেয়া হয়েছে।

প্রকাশ :নভেম্বর ২৪, ২০১৯ ৪:১০ অপরাহ্ণ