বলিউডের পর্দা কাপানো হার্টথ্রুব নায়িকা রাবিনা ট্যান্ডন। তুখোড় এই অভিনেত্রীর অভিনয় যারা দেখেছেন, তারা নিঃসন্দেহে পর্দায় তার অভাব এখনো বেশ ভালোভাবেই টের পান। রাবিনা ট্যান্ডন একাধারে একজন অভিনেত্রী, প্রযোজক ও প্রাক্তন মডেল। তিনি ‘পাত্থর কে ফুল’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখলেও পরবর্তিতে কয়েকটি তেলুগু, তামিল, কন্নড় ও বাংলা চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।
৯০-এর দশকে একের পর এক হিট ছবি এবং সুপারহিট গান দর্শকদের উপহার দিয়েছেন রাবিনা ট্যান্ডন। এক সময়ে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে তার প্রেম পর্বও ছিল বহু চর্চিত বিষয়। ৯০-এর সেই গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী রাবিনা ট্যান্ডনকে সাম্প্রতিক সময়ে বড় পর্দায় খুব বেশি দেখা না গেলেও, ডান্স রিয়ালিটি শো ‘নাচ বলিয়ে’-এর বিচারক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
সম্প্রতি তুখোড় এই অভিনেত্রী আবারো উঠে এসেছেন সংবাদের শিরোনামে। তবে সেটা তার অভিনয় বা ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে নয়। পাকিস্তানের ভূয়সী প্রশংসা করে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় একটি ভারতীয় যাত্রীবাহী বিমান। দুই দেশের মধ্যে মারাত্মক বৈরী সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলেও সম্ভাব্য বিপদের হাত থেকে ভারতীয় বিমানকে রক্ষা করে পাকিস্তান।
আলোচিত সেই ভারতীয় বিমানটি ভারতের জয়পুর থেকে ওমানের রাজধানী মাসকাটে যাচ্ছিল। বিমানে প্রায় ১৫০ জন যাত্রী ছিলেন। পাকিস্তানের সহযোগিতায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান বিমানের সকল যাত্রী।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে পাকিস্তানের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলিউড অভিনেত্রী ও প্রযোজক রাবিনা ট্যান্ডন। তিনি বলেন,‘(পাকিস্তানের পদক্ষেপে) রাজনীতির বিপরীতে মানবতা জয়ী হয়েছে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে একটি বিমানকে বাঁচিয়েছে পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।’ পাশাপাশি রাবিনা পাকিস্তানের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলেরও প্রশংসা করেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আউটলুক, পাকিস্তানের দ্য নিউজ ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, ঘটনার দিন আলোচিত সেই ভারতীয় বিমানটি ভারতের জয়পুর থেকে ওমানের রাজধানী মাসকাটে যাচ্ছিল। বিমানে প্রায় ১৫০ জন যাত্রী ছিলেন। সেদিন পাকিস্তানের দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো ছিল না। ঘন ঘন বজ্রবিদ্যুৎ হচ্ছিল। একপর্যায়ে করাচির আকাশসীমায় বিমানটি তীব্র বজ্রবিদ্যুতের মুখে পড়ে। যার কারণে বিমানটি তাৎক্ষণিকভাবে ৩৬ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ৩৪ হাজার ফুট উচ্চতায় নেমে যায়।
এরপর পাইলট নিকটবর্তী বিমানবন্দরে জরুরি বিপদ বার্তা পাঠায়। পাকিস্তানের বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার) পাইলটের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তান আকাশসীমা দিয়ে বাকি পথ ব্যবহার করা অনুমতি দেয়।
উল্লেখ্য, বালাকোটের বিমান হামলার পর পাকিস্তান টানা কয়েক মাস নিজেদের আকাশসীমা ভারতের জন্য বন্ধ করে দেয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তানি আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারেনি ভারত। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি সফরে যেতে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবদেন করে ভারত সরকার। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ইসলামাবাদ। কিন্তু বিপদের মুহূর্তে ভারতীয় বিমানের দেড় শতাধিক যাত্রীর প্রাণ রক্ষা করল পাকিস্তান। সূত্র : দ্য নিউজ।