স্পোর্টস রিপোর্টঃ সব ধরণের ক্রিকেট থেকে ৫ বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন। সোমবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে সতীর্থ আরাফাত সানি জুনিয়রকে পেটানোর দায়ে তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিসিবি।
মঙ্গলবার সকালে বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
শাহাদাতকে ৫ বছর নিষিদ্ধের পাশাপাশি ৩ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
শৃঙ্খলাজনিত কারণে এর আগেও বেশ কয়েকবার শাস্তির মুখোমুখি হন বাংলাদেশ দলের এই পেসার। তবে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেননি শাহাদাত হোসেন।
দেশের ক্রিকেটে ‘ব্যাড বয়’ হিসেবে পরিচিত এই ডান-হাতি পেসারকে এর আগে নিজ বাসার শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে জেলে যেতে হয়েছিল। একই মামলায় জেলে ছিলেন তার স্ত্রীও।
সোমবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে সতীর্থ আরাফাত সানি জুনিয়রকে মারধর করে আবারও সংবাদ শিরোনামে আসেন শাহাদাত।
খুলনায় জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচ ছিল রোববার। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে খুলনার বিপক্ষে ঢাকা বিভাগের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন শাহাদাত। ম্যাচের দ্বিতীয়দিনে এই অপকর্ম ঘটান জাতীয় দলে দীর্ঘদিন খেলা এই পেসার।
বল ঘষে উজ্জ্বল করা নিয়ে ঝামেলা শুরু। ম্যাচ চলাকালীন সতীর্থ অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রকে বল ঘষে দিতে বলেন শাহাদাত। প্রথমে বল ঘষে দিতে অস্বীকৃতি জানান আরাফাত। এরপর হালকা কথা কাটাকাটি শুরু। শাহাদাতের কথায় উত্তর দেন আরাফাতও। এরপরই তাকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন শাহাদাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রথমে চড়, পরে আরাফাতকে লাথি মারা শুরু করেন তিনি। আম্পায়ার এসে সরিয়ে দেয়ার পরও শাহাদাত আবার গিয়ে মারতে থাকেন। পরে সতীর্থরা তাকে একরকম জোর করেই নিয়ে যায় মাঠের বাইরে।
আচরণবিধির লেভেল ফোর অপরাধের দায়ে ম্যাচের শেষ দু’দিন বহিষ্কার করা হয় শাহাদাতকে।
সোমবার এ ঘটনার পর বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন বলেছিলেন, ‘ম্যাচ রেফারি উল্লেখ করেছেন যে লেভেল ৪ ভেঙেছে শাহাদাত। এই ধারা ভাঙলে এক বছর থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার নিয়ম। মঙ্গলবার টেকনিক্যাল কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছিলেন নান্নু। সেই মোতাবেক আজকের সভায় শাহাদাতকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হলো।
এদিকে পেসার শাহাদাত এ ঘটনার জন্য অনুতপ্ত। ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। সোমবার এ ঘটনার পর ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার বলেন, ‘আমি অনেক বড় ভুল করেছি। ওই কর্মকাণ্ডের জন্য আমি লজ্জিত, দুঃখিত। আমি অনুতপ্ত।’ তিনি বলেন, ‘আমার মাথা ঠিক ছিল না। এখন বুঝতে পারছি কাজটি ভালো হয়নি। আমি বিসিবিতে গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করব। কৃতকর্মের জন্য বোর্ডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুতাপ ও দুঃখ প্রকাশ করব।’
এর আগে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে জেল থেকে ফিরেও সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন শাহাদাত। জেলে যাওয়ার কারণে ওই সময়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে তাকে নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জীবিকার কথা ভেবে আবার ক্রিকেটে ফেরার অনুমতি দিয়েছিল বিসিবি।
বাংলাদেশের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ৫১ ওয়ানডে ও ছয়টি টি ২০ খেলেছেন শাহাদাত। সবশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন ২০১৫ সালে।