নব্বই দশকে গিনেসবুকে স্থান পাওয়া কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা জন্মদিনে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার কাছে একটি নতুন দিন, জন্মদিনও। সূর্যের আলো, বিকেলের মৃদু হাওয়া, সাঝের মায়া, চাঁদের আলো সবই নতুন মনে হয়। এভাবেই ভাবতে ভালো লাগে আমার।’
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। তার বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সংগীতশিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী। তার আড়াই বছর বয়সে তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে চলে যান। সেই সূত্রে তার শৈশব কেটেছে পাকিস্তানের লাহোরে।
ষাটের দশকের শুরু থেকেই পাকিস্তান টেলিভিশনে নিয়মিত গান গাইতেন রুনা লায়লা। ১৯৬৬ সালে উর্দু ভাষার ‘হাম দোনো’ চলচ্চিত্রে ‘উনকি নাজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গম মিলা’ গান গেয়ে সংগীতাঙ্গনে আলোচনায় আসেন তিনি।
১৯৭৪ সালে কলকাতায় ‘সাধের লাউ’ শিরোনামের গানের রেকর্ডিং করেন রুনা লায়লা। একই বছর মুম্বাইয়ে প্রথমবারের মতো কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করেন। এ সময় দিল্লিতে তার পরিচালক জয়দেবের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি তাকে বলিউড চলচ্চিত্র এবং দূরদর্শনের উদ্বোধনী আয়োজনে গান পরিবেশনের সুযোগ করে দেন। পরবর্তীতে গানের রেকর্ডিংয়ের সময় প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মুঙ্গেশকর তাকে আশীর্বাদ করেন। ‘ও মেরা বাবু চেল চাবিলা’ ও ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ গান দিয়ে ভারত জুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন রুনা লায়লা।
১৯৭৪ সালের প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ সিনেমায় গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন রুনা লায়লা। গানের কথা ছিল ‘ও জীবন সাথী তুমি আমার’। দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৯টি ভাষায় অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই সুরের পাখি।
রুনা লায়লা চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শিল্পী’ চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক আলমগীরের বিপরীতে অভিনয় করেন। ‘শিল্পী’ চলচ্চিত্রটি ইংরেজি চলচ্চিত্র ‘দ্য বডিগার্ড’-এর ছায়া অবলম্বনে চিত্রিত হয়েছে। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন এই কিংবদন্তি শিল্পী।