দেশে ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১২ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে নিউমোনিয়ায়। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় একজনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই বছর দেশে শিশুদের ১৩ শতাংশেরই মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া। বুধবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এ তথ্য প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারাবিশ্বে গত বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮ লাখেরও বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। অর্থাৎ প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে মৃত্যু হয় একটি শিশুর। দুই বছরের কম বয়সী যত শিশু মারা গেছে, তাদের বেশিরভাগই জীবনের প্রথম মাসেই মৃত্যুবরণ করেছে।
নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর জন্য পাঁচটি দেশ দায়ী বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি। দেশগুলো হলো— নাইজেরিয়া (এক লাখ ৬২ হাজার), ভারত (এক লাখ ২৭ হাজার), পাকিস্তান (৫৮ হাজার), গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (৪০ হাজার) ও ইথিওপিয়া (৩২ হাজার)।
এই রোগটি টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং সঠিকভাবে নির্ণয় করা গেলে স্বল্প ব্যয়ের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সহজেই চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু কোটি শিশুকে এখনও টিকা দেওয়া হচ্ছে না। প্রতি তিনটি শিশুর একটির মধ্যে লক্ষণগুলো উপস্থিত থাকলেও তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায় না। মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে। যা দরিদ্রতম দেশগুলোতে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। এ কারণে মৃতের সংখ্যা কমানো যায় না। বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন,‘এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জোরালো বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি এবং বাড়তি বিনিয়োগ জরুরি। যেখানে শিশুরা আছে সেখানে কেবলমাত্র সাশ্রয়ী সুরক্ষা ও প্রতিরোধমূলক এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই আমরা সত্যিকারভাবে লাখো জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবো।’
২০১৮ সালে অন্য যেকোনও রোগের তুলনায় এই রোগে অনেক বেশি সংখ্যক পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়। ওই বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী চার লাখ ৩৭ হাজার শিশু ডায়রিয়ার এবং দুই লাখ ৭২ হাজার শিশু ম্যালেরিয়ায় মারা গেছে।