দেশজনতা অনলাইনঃ নারীর অধিকার ও সুরক্ষায় বেশকিছু আইন কার্যকর থাকলেও ঘরেই বেশি অরক্ষিত নারী। পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনায় স্বামীর হাতে স্ত্রী হত্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রতিকূলতাকে জয় করা নারীরা সবসময়ই পরিবার ও সমাজে চক্ষুশূল। ফলে যে পুরুষ নারীর এগিয়ে চলায় চাপ বোধ করেন, তিনি দমনের মধ্য দিয়েই নিজের অক্ষমতাকে ঢাকতে চেষ্টা করেন। আর এই টানাপড়েনে স্বামীর হাতে খুন হচ্ছেন স্ত্রী।
এদিকে, নারী অধিকারকর্মীরা মনে করেন, আইন থাকলেই হবে না, সেটা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো সক্রিয় থাকবে হবে। বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে— সেখানে অপরাধ কমার সুযোগ কম।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে করা জরিপে দেখা গেছে, এবছরের প্রথম ৯ মাসে সারাদেশে ১৫২ জন নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন৷ ২০১৮ সালে ১২ মাসে এসংখ্যা ছিল ১৯৩ জন। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে হত্যাসহ পরিবারে সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৯৭ জন নারী। এরমধ্যে স্বামীর হাতে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন ১৪৫ জন৷
নারীকে সুরক্ষা দিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে পারিবারিক পরিসরে নারী নির্যাতন বন্ধে প্রণীত হয় পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০। এই আইনে পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনও ব্যক্তি কতৃর্ক পরিবারের অন্য কোনও নারী বা শিশু সদস্যের ওপরে শারীরিক নির্যাতন,মানসিক নির্যাতন,যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বুঝাবে।
বেসরকারি সংগঠন ‘উই ক্যান’ এর নির্বাহী সমন্বয়ক জিনাত আরা হক এ বিষয়ে বলেন, ‘আইন মানে তো শুধু কাগজ না— আইন মানে প্রমাণ, আইন মানে সাক্ষী,পুলিশ দিয়ে তদন্ত, কেস ফাইল করা,ঠিক-ঠাক ধারা দেওয়া, পেশকারকে ঘুষ দেওয়া ও উকিল ধরা। এতকিছুর পরও একজন নারী বিচার পাবেন— তা আশা করা যায় না। আর আশা করা যায় না বলেই এসব বিচারহীনতার মধ্যে অপরাধ বাড়তেই থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নৃশংস ও ভয়াবহ কোনও ঘটনা না ঘটলে গ্রাম সালিসের মাধ্যমে ঘটনা নিষ্পত্তি করে ফেলা হয়। এটিও নারীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা রয়ে গেছে। আমরা আধুনিক হতে পারিনি। সমাজ একটা পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে, যেখানে মানসিক অর্থনৈতিক সামাজিক চাপ আসে এবং পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার যে চ্যালেঞ্জ, রোজ সেটার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের আইন আছে ভালো, কিন্তু ভিকটিমের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। রিসোর্স ম্যানপাওয়ার মনিটর করা সব পুরনো ধাঁচের রয়ে গেছে।’ এছাড়া, মাদকের যথেচ্ছ ব্যবহার পারিবারিক জীবন ব্যাহত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্তি সাধারণ জীবন-যাপন ব্যাহত করে। সামাজিক এসব অস্থিরতায় সম্পত্তিকেন্দ্রিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে এধরনের হত্যা আরও বাড়বে।’
সংসারের পুরুষ যিনি, তার অধিকারের পরিধি অসীম মনে করা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করেন মনোচিকিৎসক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্ত্রী যতই আধুনিক হোক— সে আমার অধীন,আমার সাম্রাজ্যের শোভা বাড়াবে। বাইরে তার স্বতন্ত্র অবস্থান থাকবে— এটা মেনে নেওয়ার মতো পুরুষ কম আছে। এদিকে, আমাদের সমাজে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের চোখ খুলছে। তারা এখন আর অবরোধবাসিনীর মতো অবস্থায় নেই। এই পরিবর্তন মেনে নেওয়া পুরুষের জন্য কঠিন।’
এমনকি একা মা তার সন্তান লালনে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক,কাজের সম্পর্ক, বিভিন্ন জায়গায় নারী স্বাধীনতা ভোগ করতে চায়— কিন্তু পুরুষ তা মেনে নিতে প্রস্তুত নয় ।’
কেবল পুরুষ কেন আক্রমণাত্মক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সাংস্কৃতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই চিত্রায়ন করা হয়েছে। তারা আধিপত্যবাদী ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেত চায়। পুরুষ এই সমাজে সুপিরিয়র। ফলে তিনি যখন নারীকে মানুষ হিসেবে রুখে দাঁড়াতে দেখেন, সেটি সহ্য করতে পারেন না এবং আক্রমণ করে বসেন।’
এদিকে, নারী অধিকারকর্মীরা মনে করেন, আইন থাকলেই হবে না, সেটা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো সক্রিয় থাকবে হবে। বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে— সেখানে অপরাধ কমার সুযোগ কম।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে করা জরিপে দেখা গেছে, এবছরের প্রথম ৯ মাসে সারাদেশে ১৫২ জন নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন৷ ২০১৮ সালে ১২ মাসে এসংখ্যা ছিল ১৯৩ জন। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে হত্যাসহ পরিবারে সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৯৭ জন নারী। এরমধ্যে স্বামীর হাতে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন ১৪৫ জন৷
নারীকে সুরক্ষা দিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে পারিবারিক পরিসরে নারী নির্যাতন বন্ধে প্রণীত হয় পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০। এই আইনে পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনও ব্যক্তি কতৃর্ক পরিবারের অন্য কোনও নারী বা শিশু সদস্যের ওপরে শারীরিক নির্যাতন,মানসিক নির্যাতন,যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বুঝাবে।
বেসরকারি সংগঠন ‘উই ক্যান’ এর নির্বাহী সমন্বয়ক জিনাত আরা হক এ বিষয়ে বলেন, ‘আইন মানে তো শুধু কাগজ না— আইন মানে প্রমাণ, আইন মানে সাক্ষী,পুলিশ দিয়ে তদন্ত, কেস ফাইল করা,ঠিক-ঠাক ধারা দেওয়া, পেশকারকে ঘুষ দেওয়া ও উকিল ধরা। এতকিছুর পরও একজন নারী বিচার পাবেন— তা আশা করা যায় না। আর আশা করা যায় না বলেই এসব বিচারহীনতার মধ্যে অপরাধ বাড়তেই থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নৃশংস ও ভয়াবহ কোনও ঘটনা না ঘটলে গ্রাম সালিসের মাধ্যমে ঘটনা নিষ্পত্তি করে ফেলা হয়। এটিও নারীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা রয়ে গেছে। আমরা আধুনিক হতে পারিনি। সমাজ একটা পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে, যেখানে মানসিক অর্থনৈতিক সামাজিক চাপ আসে এবং পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার যে চ্যালেঞ্জ, রোজ সেটার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের আইন আছে ভালো, কিন্তু ভিকটিমের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। রিসোর্স ম্যানপাওয়ার মনিটর করা সব পুরনো ধাঁচের রয়ে গেছে।’ এছাড়া, মাদকের যথেচ্ছ ব্যবহার পারিবারিক জীবন ব্যাহত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্তি সাধারণ জীবন-যাপন ব্যাহত করে। সামাজিক এসব অস্থিরতায় সম্পত্তিকেন্দ্রিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে এধরনের হত্যা আরও বাড়বে।’
সংসারের পুরুষ যিনি, তার অধিকারের পরিধি অসীম মনে করা এর অন্যতম কারণ বলে মনে করেন মনোচিকিৎসক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্ত্রী যতই আধুনিক হোক— সে আমার অধীন,আমার সাম্রাজ্যের শোভা বাড়াবে। বাইরে তার স্বতন্ত্র অবস্থান থাকবে— এটা মেনে নেওয়ার মতো পুরুষ কম আছে। এদিকে, আমাদের সমাজে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের চোখ খুলছে। তারা এখন আর অবরোধবাসিনীর মতো অবস্থায় নেই। এই পরিবর্তন মেনে নেওয়া পুরুষের জন্য কঠিন।’
এমনকি একা মা তার সন্তান লালনে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক,কাজের সম্পর্ক, বিভিন্ন জায়গায় নারী স্বাধীনতা ভোগ করতে চায়— কিন্তু পুরুষ তা মেনে নিতে প্রস্তুত নয় ।’
কেবল পুরুষ কেন আক্রমণাত্মক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সাংস্কৃতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই চিত্রায়ন করা হয়েছে। তারা আধিপত্যবাদী ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেত চায়। পুরুষ এই সমাজে সুপিরিয়র। ফলে তিনি যখন নারীকে মানুষ হিসেবে রুখে দাঁড়াতে দেখেন, সেটি সহ্য করতে পারেন না এবং আক্রমণ করে বসেন।’