অভিভাকরা জানান, অনেক অনুরোধ করার পরও শ্রেণি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ তাদের ছেলে-মেয়েদের প্রবেশপত্র দিতে রাজী হননি। এক টাকা কম দিলেও প্রবেশপত্র দেওয়া হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এবার জেএসসি পরীক্ষায় বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯১জন শিক্ষার্থী অংশ নিবে। ২ নভেম্বর শনিবার থেকে শুরু হবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জেএসসি পরীক্ষা। আর এ পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগে প্রতিদিন সকাল ৯টাকা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোচিং চললেও টেস্ট পরীক্ষার পর থেকে চলে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ৬শ’ টাকা করে ফি নিলেও শুধুমাত্র অক্টোবর মাসে নেওয়া হচ্ছে ৪শ’ টাকা।
অভিভাবকরা জানান, জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ১৯১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেকেই তাদের কোচিং ফি পরিশোধ করে প্রবেশপত্র নিয়েছে। কিন্তু অনেক অসচ্ছল পরিবার কোচিংয়ের নির্ধারিত টাকা এখনো জমা দিতে পারেনি। ফলে তারা এখনো প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে এক অভিভাবক মো. নুরুল আলম জানান, প্রতি মাসে ৬ শ’ টাকা করে কোচিং ফি দিতে বাধ্য করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হঠাৎ করেই এ মাসে ২শ’ টাকা কমিয়ে ৪শ’ টাকা কোচিং ফি চেয়েছে। টাকা জোগার করতে না পারায় ফি দিতে পারছি না। তাই আমার মেয়ের প্রবেশপত্রও দিচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার আর মাত্র একদিন আছে। এখন মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসমাতুল মাইমুনা বলেন,‘আমার পরিবার এখনো কোচিংয়ের টাকার যোগার করতে পারেনি। শনিবার জেএসসি পরীক্ষা। বৃহস্পতিবারের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে প্রবেশপত্রের জন্য পরীক্ষা দিতে পারবো কিনা বলতে পারছি না।’
আরেক অভিভাবক মো. আমিন বলেন, ‘আমি অনেক কষ্টে টাকা যোগাড় করে ৫১০ টাকা ফি দিয়ে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেছি। কিন্তু অনেকে এখনো প্রবেশপত্র নিতে পারেনি।’
এ বিষয় জানার জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে কয়েকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দিপ্তী কণা দে বলেন, ‘যারা অচ্ছলতার কারণে কোচিং ফি জমা দিতে পারছে না তাদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে নিচ্ছি। কিন্তু এখনো যারা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারেনি, তারা কেউ তো আমার কাছে আসেনি। তারা আসলে অবশ্যই কোচিং ফি কমিয়ে দেওয়া হবে। তবে কতজন এখনো পবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারেনি তা তিনি জানাতে পারেননি।’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোমা রানী বড়ুয়া বলেন, ‘এটা কোচিং না, বিশেষ ক্লাস হবে। এতে তো এত টাকা নেওয়ার কথাও না। অবশ্যই সবাই প্রবেশপত্র পাবে, তারা পরীক্ষাও দিতে পারবে। আমি এ বিষয়ে খবর নিচ্ছি।’