ক্যাসিনোর মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদের মালিকদের মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কবজায়।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) পক্ষ থেকে ক্যাসিনো হোতাদের অর্থ পাচার ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের তথ্য-উপাত্ত দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেছেন। আজ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বিআইএফইউ’র প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ও দুদক চেয়ারম্যানের মধ্যে রুদ্ধদার বৈঠক হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও বিএফআইউ প্রধান মানিলন্ডারিং বিষয়সহ অবৈধ ব্যাংকিং নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় বিএফআইইউ প্রধান চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে মানলিন্ডারিং সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য দুদক চেয়ারম্যানের কাছে সরবরাহ করেছেন। এছাড়া ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের আর্থিক গোয়েন্দা তথ্যও অবহিত করেছেন। বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের মানিলন্ডারিংয়ের বড় একটি তালিকা নিয়ে তথ্য বিনিময় হয়।
এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বৈঠকের তথ্য স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন ১৫ থেকে ২০ জনের তালিকা নিয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন অভিযোগে ১৫ থেকে ২০ জনের তালিকা দুদকের হাতে এসেছে। তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। যদিও ক্যাসিনো সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দুদকের কাজ নয়। শুধু অবৈধ সম্পদ অর্জনের অংশটুকু দুদকের তফসিলভুক্ত।
গত ১ অক্টোবর ক্যাসিনোর মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। এরপর সারা দেশে র্যাব ও পুলিশ অন্তত ৩৭টি অভিযানে প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন যুবলীগ ও কৃষক লীগের পাঁচ শীর্ষস্থানীয় নেতা। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহি্ষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও সহ-সভাপতি আরমান, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক ওরফে এনু ভূঁইয়া ও রুপন ভূঁইয়া, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি লোকমান হোসেন ভূঁইয়া অন্যতম।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বহু ভিআইপির নাম ও অঢেল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে।