২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:৫৬
Turkish President Recep Tayyip Erdogan waves at representatives of Turkish Parliament prior to his speech during the opening of the third legislative session of the Turkish parliament’s 27th term on October 1, 2019 at the Grand National Assembly of Turkey (TBMM) in Ankara. (Photo by Adem ALTAN / AFP)

বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে খুনিরা: এরদোগানের নিবন্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ও খ্যাতনামা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ঠিক এক বছর আগে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয়। বুধবার নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হয়েছে।

কিন্তু এক-এক করে বারোটা মাস কেটে গেলেও নিজ দেশের হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি আরব। আদালত ও বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। শুনানিতে জনগণের প্রবেশাধিকার খর্ব করা হয়েছে।

এমনকি হত্যাকারীদের মুক্ত জীবনযাপনের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। খুনিরা এখন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সৌদির ভাবমূর্তি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএসে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে খাসোগি হত্যার দায় নিজের ঘাড়ে নেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স।

তিনি জানান, তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, এর দায় তার ওপর বর্তায়। তবে খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে বিতর্কিত ও আলোচিত অঘটন। নাইন-ইলেভেন সন্ত্রাসী হামলার পর আর কোনো অঘটন এভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও শৃঙ্খলার হুমকি হয়ে উঠেনি। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল এক বছর পরও সে সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে পারেনি বিশ্ব। আর সেটাই ভয়ের প্রকৃত কারণ।

খাসোগি হত্যার সবদিক সামনে আসবে কিনা- এমন প্রশ্নই নির্ধারণ করবে কী ধরনের বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমাদের সন্তানরা বসবাস করবে। তবে হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা সামনে আনতে তুরস্ক অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

তুরস্ক বরাবরই সৌদি বন্ধু ও মিত্র রাষ্ট্র হিসেবে দেখে আসছে এবং এখনও সেটা অব্যাহত রেখেছে।

আমার প্রশাসনও শুরু থেকেই খাসোগি হত্যাকারী এবং সৌদি বাদশাহ সালমান ও তার অনুগত নাগরিকদের মাঝে একটি স্পষ্ট ও নির্ভুল বিভাজন টেনেছে। আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কারণে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমরা নীরব থাকতে পারিনি। কথায় আছে, ‘প্রকৃত বন্ধুই তিক্ত কথাটা আগে বলে দেয়।’

খাসোগিকে হত্যাকারী ১৫ সদস্যের আততায়ী দল কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে তুরস্কে ঢুকেছিল। তাদের কাছে কূটনৈতিক পাসপোর্ট থাকার তথ্যটিই একটি বিপজ্জনক বার্তা ছড়ায়। খাসোগির হত্যাকারীরা দায়মুক্তি নিয়ে সৌদি আরবে যে স্বাধীনতা উপভোগ করছে, তা হয়তো ওই পাসপোর্টের চেয়েও বিপজ্জনক।

সৌদি রাষ্ট্রের ভেতর একটি ‘ছায়া রাষ্ট্র’ রয়েছে। এর সঙ্গে সৌদি ও এর জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। ওই ছায়া রাষ্ট্রটিই নিজ স্বার্থ পূরণে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

প্রকাশ :অক্টোবর ৩, ২০১৯ ১:৩৮ অপরাহ্ণ