২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৩৭
The girl, who was burnt to death in front of the police station, died rtv

গায়ে আগুন দেয়া সেই কলেজছাত্রী মারা গেছেন

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীতে থানা থেকে বাইরে বেরিয়ে প্রকাশ্যে কেরোসিন ঢেলে নিজের গায়ে আগুন দেয়া কলেজছাত্রী লিজা রহমান (২০) মারা গেছেন। ঢাকায় শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে তিনি মারা যান।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকার ওই হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে আমরা লিজার চিকিৎসার ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছিলাম। সকালে খবর পেয়েছি যে তিনি মারা গেছেন। লাশের ময়নাতদন্ত এবং আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

লিজা রহমানের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজশাহী মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করতেন। লিজা তার বাবার পালিত সন্তান। নিজের ইচ্ছায় আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছিলেন। তার স্বামীর নাম সাখাওয়াত হোসেন (২২)। সাখাওয়াত রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সাখাওয়াতের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায়।

বিয়ের পর লিজা ও সাখাওয়াত আলাদা দুটি মেসে থাকতেন। কিন্তু ছেলের পরিবার বিয়ে মেনে না নেওয়া এবং ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তার মতবিরোধ হয় লিজার। এ নিয়ে গত শনিবার তিনি প্রথম নগরীর শাহমখদুম থানায় অভিযোগ করতে যান। পরে পুলিশের পরামর্শে থানা সংলগ্ন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়েছিলেন।

কিন্তু লিজার কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় রেকর্ড নেই। লিজা সেখান থেকে বেরিয়ে খানিক দূরে এসে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগান। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই রাতেই তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে পাঠানো হয়। পুলিশই তাকে সেখানে নিয়ে যায়। আগুনে লিজার শরীরের ৬৩ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে গত রবিবার দুই সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে কমিটি। বেঁধে দেয়া সময়ের শেষ দিন বুধবার। তবে সকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল হয়নি বলে জানিয়েছেন আরএমপির মুখপাত্র।

তিনি বলেন, পত্রিকায় খবর এসেছিল যে, অভিযোগ না নেয়ার কারণে ওই ছাত্র গায়ে আগুন দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটির প্রধান আরএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সালমা বেগম এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেননি। অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন হলে তিনি সময় বৃদ্ধির আবেদন করবেন। প্রতিবেদনে পুলিশের কারও কোনো অবহেলা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশ :অক্টোবর ২, ২০১৯ ১২:৩৮ অপরাহ্ণ