দেশজনতা অনলাইন : জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মেঝে থেকে ওয়াশরুমে আবর্জনার স্তূপ নিত্যদিনের দৃশ্য বলে অভিযোগ তুলেছেন রোগী ও স্বজনরা। তাদের অভিযোগ—হাসপাতালটির দুই ভবনের মাঝখানের জায়গা ভরে থাকে খাবারের উচ্ছ্বিষ্ট, প্লাস্টিক, তুলাসহ মেডিক্যাল বর্জ্যে। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এসব আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো হাসপালেই। এই উৎকট গন্ধের কারণে রোগীর পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আসা স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়েন। এছাড়া, হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এই হাসপাতালে রোগীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় স্বীকার করে বলছে, লোকবল কম থাকায় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে হৃদরোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। যে কারণে সারাদেশ থেকে হৃদরোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অন্যান্য হাসপাতালে বেড না থাকলে রোগীদের ফিরিয়ে দিতে পারলেও এ হাসপাতাল থেকে ফেরানো সম্ভব হয় না। এ কারণে হাসপাতালের নির্ধারিত বেডের বাইরে রোগী ভর্তি করতে বাধ্য হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগীর তুলনায় হাপসাতালের জনবল কম, অনেক বিভাগে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এতে হাসপাতালের কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে ফরিদপুরের কামারখালী থেকে শ্বশুরকে নিয়ে এসেছেন ফাহমিদা। কোনও রকমে শ্বশুরকে পোস্ট সিসিইউতে রাখার ব্যবস্থা করতে পারলেও সেখানে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে ফাহমিদা বলেন, ‘এত নোংরা হতে পারে এই হাসপাতালের ওয়াশরুম, এটা জানা ছিল না।’
ফাহমিদার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পাশের বেড থেকে আরেক রোগীর স্বজন বলে ওঠেন, ‘কিছুক্ষণ এখানে থাকুন। এরপর দেখুন নাকে এসে লাগবে গন্ধ, থাকা যায় না।’
জানা গেছে, ৪৩৪ শয্যার এই হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। নির্ধারিত বেড়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোরের মেঝে, সিঁড়ির সামনে, বাথরুমের পাশে যে যেখানে পারছেন, সেখানেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৫ সালের পর থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানের স্বাস্থ্যখাতের নিয়োগবিধিতে নবসৃষ্ট পদগুলো অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এই পদগুলোতে নিয়োগ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, হাসপাতালের সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে বর্তমানে ৮২টি পদের মধ্যে ৫৪টি পদে চিকিৎসক রয়েছেন, শূন্য পদের সংখ্যা ২৮টি আর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এই হাসপাতালে ওএসডি হিসেবে কর্মরত আছেন ৪৮ জন। হাসপাতালের অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগ, কার্ডিওলজি বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ, ভাসকুলার সার্জারি বিভাগ, পারফিউসনিস্ট, ইএমও ( ব্ল্যাডব্যাংক), জুনিয়র অ্যানেসথেটিস্টসহ বিভিন্ন বিভাগে ২১৫টি পদ থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন ১৯০ জন। অর্থাৎ ঘাটতি রয়েছে ২৫ পদে।
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক বলেন, ‘শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে যেখানে চিকিৎসক থাকার কথা আট থেকে ১০জন, সেখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র চারজন, কার্ডিয়াক অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে তিন ভাগের এক ভাগ রয়েছেন চিকিৎসক। প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের একেবারে নাজুক। তারা আরও বলেন, পুরো বিশ্বে হৃদরোগ হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। অথচ এই হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। বিভাগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে একেবারেই নজর দিচ্ছে না বলেও তারা অভিযোগ করেন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে, হাসপাতালটির একজন ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, ‘এখানে জনবল সংকট রয়েছে। ওয়ার্ডবয়, আয়া, এমএলএসএস ঘাটতি রয়েছে। আর এর পুরো প্রভাব পড়ে পুরো হাসপাতালে। এই ঘাটতির কারণে হাসপাতালের ভেতরের দিকে নোংরা হয়ে থাকে। ওয়ার্ডের ভেতরে আবর্জনা থাকে, ওয়াশরুমে ঢোকা যায় না দুর্গন্ধের কারণে।’
জানতে চাইলে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন ৩৩২ জন। কিছু দিন আগে প্রয়োজনীয় পরিমাণ নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছ। অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদসংখ্যা রয়েছে ৪১৭টি। এরমধ্যে ১৩০টি পদ শূন্য। মূলত এই কর্মকর্তা-কর্মচারী কম থাকার জন্যই রোগীদেরও ভোগান্তি অনেক। কিন্তু সেসব কিছুর সমাধান হতে চলেছে।’
ডা. আফজালুর রহমান আরও বলেন, ‘আরও ১৮২টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত সবকিছু প্রক্রিয়া শেষ করে এখন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে। সেখানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই সরকারি আদেশ জারি হবে। তখন আর জনবল সংকট থাকবে না।’ তখন রোগীদের ভোগান্তির শেষ হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে হৃদরোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। যে কারণে সারাদেশ থেকে হৃদরোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অন্যান্য হাসপাতালে বেড না থাকলে রোগীদের ফিরিয়ে দিতে পারলেও এ হাসপাতাল থেকে ফেরানো সম্ভব হয় না। এ কারণে হাসপাতালের নির্ধারিত বেডের বাইরে রোগী ভর্তি করতে বাধ্য হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগীর তুলনায় হাপসাতালের জনবল কম, অনেক বিভাগে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এতে হাসপাতালের কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে ফরিদপুরের কামারখালী থেকে শ্বশুরকে নিয়ে এসেছেন ফাহমিদা। কোনও রকমে শ্বশুরকে পোস্ট সিসিইউতে রাখার ব্যবস্থা করতে পারলেও সেখানে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে ফাহমিদা বলেন, ‘এত নোংরা হতে পারে এই হাসপাতালের ওয়াশরুম, এটা জানা ছিল না।’
ফাহমিদার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পাশের বেড থেকে আরেক রোগীর স্বজন বলে ওঠেন, ‘কিছুক্ষণ এখানে থাকুন। এরপর দেখুন নাকে এসে লাগবে গন্ধ, থাকা যায় না।’
জানা গেছে, ৪৩৪ শয্যার এই হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। নির্ধারিত বেড়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোরের মেঝে, সিঁড়ির সামনে, বাথরুমের পাশে যে যেখানে পারছেন, সেখানেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৫ সালের পর থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানের স্বাস্থ্যখাতের নিয়োগবিধিতে নবসৃষ্ট পদগুলো অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এই পদগুলোতে নিয়োগ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, হাসপাতালের সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে বর্তমানে ৮২টি পদের মধ্যে ৫৪টি পদে চিকিৎসক রয়েছেন, শূন্য পদের সংখ্যা ২৮টি আর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এই হাসপাতালে ওএসডি হিসেবে কর্মরত আছেন ৪৮ জন। হাসপাতালের অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগ, কার্ডিওলজি বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ, ভাসকুলার সার্জারি বিভাগ, পারফিউসনিস্ট, ইএমও ( ব্ল্যাডব্যাংক), জুনিয়র অ্যানেসথেটিস্টসহ বিভিন্ন বিভাগে ২১৫টি পদ থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন ১৯০ জন। অর্থাৎ ঘাটতি রয়েছে ২৫ পদে।
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক বলেন, ‘শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে যেখানে চিকিৎসক থাকার কথা আট থেকে ১০জন, সেখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র চারজন, কার্ডিয়াক অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে তিন ভাগের এক ভাগ রয়েছেন চিকিৎসক। প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের একেবারে নাজুক। তারা আরও বলেন, পুরো বিশ্বে হৃদরোগ হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। অথচ এই হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। বিভাগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে একেবারেই নজর দিচ্ছে না বলেও তারা অভিযোগ করেন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে, হাসপাতালটির একজন ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, ‘এখানে জনবল সংকট রয়েছে। ওয়ার্ডবয়, আয়া, এমএলএসএস ঘাটতি রয়েছে। আর এর পুরো প্রভাব পড়ে পুরো হাসপাতালে। এই ঘাটতির কারণে হাসপাতালের ভেতরের দিকে নোংরা হয়ে থাকে। ওয়ার্ডের ভেতরে আবর্জনা থাকে, ওয়াশরুমে ঢোকা যায় না দুর্গন্ধের কারণে।’
জানতে চাইলে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন ৩৩২ জন। কিছু দিন আগে প্রয়োজনীয় পরিমাণ নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছ। অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদসংখ্যা রয়েছে ৪১৭টি। এরমধ্যে ১৩০টি পদ শূন্য। মূলত এই কর্মকর্তা-কর্মচারী কম থাকার জন্যই রোগীদেরও ভোগান্তি অনেক। কিন্তু সেসব কিছুর সমাধান হতে চলেছে।’
ডা. আফজালুর রহমান আরও বলেন, ‘আরও ১৮২টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত সবকিছু প্রক্রিয়া শেষ করে এখন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে। সেখানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরই সরকারি আদেশ জারি হবে। তখন আর জনবল সংকট থাকবে না।’ তখন রোগীদের ভোগান্তির শেষ হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।