নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবারের বাজেট করা হয়েছে নির্বাচনে জেতার লক্ষ্য নিয়ে এমন মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘সামনে নির্বাচন একটা বড় বাজেট ঘোষণা করে জনগণকে বোঝানো হচ্ছে যে, এ সরকার একটা বড় বাজেট দিয়েছে। বড় বাজেট মনে করে তারা সরকারকে ভোট দেবে।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘২০১৭-২০১৮ বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে মান্না এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে সদ্য আত্মপ্রকাশিত রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে অনেক ধরনের মন্তব্য শুনতে হচ্ছে। ভাবখানা এই যে, মুহিত সাহেব একাই এই বাজেট দিয়েছেন। আসলে তা নয়, এটাতে প্রধানমন্ত্রীরও সমর্থন আছে। কারণ দুটি বড় দলের নেত্রীর বাইরে কারো পক্ষেই একা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়। তাই বলতে হয়, এই বাজেট নিয়ে একা মুহিত সাহেবদের দায়ী করে লাভ নেই।’
আসলে দেশের মানুষ যে শান্তিতে নেই এটা সবাই জানে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘জনগণ দেশে সুশাসন চায়, চায় জবাবদিহিতা। তারা যে ট্যাক্স দেয় এর সুষ্ঠু ব্যবহার হচ্ছে কি-না? ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে কি-না জনগণ তার হিসাব চায়।’
দুর্নীতি কমাতে পারলে দেশে বেকারদের ভাতা দেয়া যাবে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘সরকারের দেয়া এই বাজেটকে পরিমার্জিত, পরিবর্ধন করে একটি কল্যাণ বাজেট দেয়া সম্ভব।’
নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে জানিয়ে মান্না বলেন, ‘দেশে নির্বাচনের বাতাস ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনের বল মাঠে গড়াচ্ছে। এখনো ‘এ’ এবং ‘বি’ টিমই মাঠে আছে, ‘সি’ কিন্তু দৃশ্যমান নয়।’
দেশে গণতন্ত্রের মূল্যবোধ নেই, গণতন্ত্রের প্রশ্নকে স্পষ্ট করে এখনই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে মন্তব্য করে মান্না বলেন, ‘দেশ এখন ভয়ের চাদরে ঢেকে গেছে, ভয় পেলে চলবে না। আমরা ফেয়ার ইলেকশন চাই, নাগরিক ঐক্য কোনো ভয়ের কাছে মাথা নত করে না। এখন যে ফ্যাসিস্ট ও অন্যায়ের শাসন চলছে তার অবসানের জন্য আগামী ইলেকশনে ৩০০ আসনে নির্বাচন করবো।’
সেমিনারে অর্থনীতিবিদ ড. আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, ‘সাধারণ মানুষ চায় ভাত, কাপড়, বাসস্থান। আর চায় ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এই পাঁচটি মৌলিক বিষয়। এগুলো মাথায় নিয়ে জাতীয় বাজেট করা দরকার। একাত্তরে বঙ্গবন্ধু লড়াই করেছিলেন ২২ পরিবারের হাত থেকে মুক্তি দিতে। সেটা এখন ২২০০ পরিবারে দাঁড়িয়েছে। তাদের সুবিধার জন্যে এই বাজট দেয়া হয়েছে, জনগণের জন্য নয়।’
আবু নাসের বলেন, ‘এই বাজেটে সরাসরি ট্যাক্স ধরা হয়েছে ৩৪.৩ শতাংশ, আর বাকি পুরোটাই পরোক্ষ কর থেকে, যার মূল অংশ আসবে ভ্যাট থেকে যার পরিমাণ ৩৬.৮ শতাংশ।’
জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর নাকি জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ বাজেট দিয়েছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ লুটের বাজেট কিভাবে শ্রেষ্ঠ বাজেট হয়। লুট করেইতো ক্ষমতায় এসেছেন এবং লুটের বাজেট দিচ্ছেন।’
স্বল্প আয়ের মানুষের শোষণ করে নিয়ে ধনীদের সম্পদ বাড়ানোর বাজেট উল্লেখ করে মালেক বলেন, ‘স্থানীয় দলের নেতাকর্মীদের লুটের ব্যবস্থা আছে এই বাজেটে। বেকারদের কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ নেই। সব জায়গায় সূচকের নেতিবাচক প্রভাব তারপরও ৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি হবে কিভাবে?’ এই বাজেট দলীয় গোষ্ঠীর স্বার্থের বাজেট বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএম