জনসনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে ব্রিটেনের প্রায় সবগুলো বিরোধীদল। তারা মনে করছে, কোনো চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনকে বের করে আনার যে পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী জনসন করছেন, বিরোধীদের হস্তক্ষেপে তা যেন সংসদ আটকে না যায়, তার জন্যই সংসদের অধিবেশন স্থগিত করার বিরল এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন।
তবে প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের গণতন্ত্রকে চরম হুমকির মুখে ফেলেছেন। সংসদের স্পিকার জন বারকো মন্তব্য করেছেন, এই পদক্ষেপ সংবিধান লঙ্ঘনের সামিল হবে।
সবচেয়ে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে বিরোধীদল এসএনপি নেত্রী ও স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টারজনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একটা স্বৈরশাসকের মত আচরণ করছেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’।
তিনি বলেন, ‘তিনি কিছু বাড়িয়ে বলছেন না। কিন্তু যদি সংসদের এমপিরা প্রধানমন্ত্রীকে ঠেকাতে না পারেন, তাহলে ব্রিটেনের সংসদীয় গণতন্ত্রের মৃত্যু হবে।’
তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ব্রেক্সিটের সঙ্গে সংসদ স্থগিত রাখার কোন সম্পর্ক নেই। সরকারের সংসদীয় কার্যক্রমের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন শুরুর জন্য তিনি ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না।
তিনি বলেন, তার সরকার একটি নতুন সরকার। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য তাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে, যেগুলোর জন্য প্রয়োজন নতুন আইন। ফলে রানীর ভাষণের আয়োজন করা হয়েছে ১৪ই অক্টোবর, সে কারণেই কয়েক সপ্তাহ সংসদ স্থগিত থাকবে এবং ব্রেক্সিটের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
কিন্তু বিরোধীরা তার এই যুক্তি গ্রহণ করছেন না। তাদের কথা, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট করাই সরকারি দলের আসল লক্ষ্য।
লন্ডনে ব্রিটিশ রাজনীতির একজন বিশ্লেষক ড. মুশতাক খান বলেন, এই ধরনের সঙ্কট ব্রিটেনের বহু বছরের রাজনীতির ইতিহাসে খুবই বিরল। তার মতে, বিরোধীদের পক্ষে তেমন কিছু করা কঠিণ কারণ প্রধানমন্ত্রী যা করছেন আইন মেনেই তা করছেন।