ম্যান বুকার জয়ী অরুন্ধতীর এমন মন্তব্যের পর টুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে অরুন্ধতীর নাম ব্যবহার করছে ভারতীয়রা। এছাড়া তার এমন মন্তব্য হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে। কোনো কোনো পাকিস্তানী তার পক্ষে কথা বললেও ভারতীয়রা তার মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন।
পাকিস্তান ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচক কানাডিয়ান সাংবাদিক তারেক ফাতাহ অরুন্ধতীর এই ভিডিওটি টুইট করে লিখেছেন, ‘তিনি (অরুন্ধতী) বলেছেন, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কখনো তাদের নিজেদের নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়নি। তিনি কি অন্ধ ও বধির ছিলেন ১৯৭১ সালে যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যায় বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল? তিনি কী বেলুচিস্তানের ব্যাপারে অজ্ঞাত? তিনি আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের রিপোর্ট পড়ছেন।’
অনেক ভারতীয় তারেক ফাতাহর মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন এবং অরুন্ধতীর এমন মন্তব্যের নিন্দা করেছেন।
এক টুইটার ব্যবহারকারী অরুন্ধতীকে আক্রমণ করে বলেন, ‘তিনি একজন ছদ্মবেশী বুদ্ধজীবী। পাকিস্তান যখন কাশ্মীরের জন্য ইউএনএসসিতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে তখন আলোচনায় থাকার জন্য অরুন্ধতী তার আত্মা বিক্রি করেছেন। সীমান্তের শত্রুদের চেয়ে এসব ছদ্মবেশী বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে বেশি হুমকি পেয়েছে ভারত।’
আয়েশা ইজাজ নামের এক পাকিস্তানী আইনজীবী জানান, ভারতীয় রাষ্ট্র এবং তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করে মন্তব্য করার জন্য অরুন্ধতী রায়কে সম্মান জানাই। একইভাবে যারা পাকিস্তানি রাষ্ট্র এবং তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সমালোচনা করা তাদেরকেও আমি সম্মান জানাই।
যা বলেছেন অরুন্ধতী
ভিডিওর শুরুতে অরুন্ধতী রায় দাবি করেন, ভারত প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সেনাবাহিনীকে কাশ্মীর এবং তেলেঙ্গানার মানুষের ওপর, পাঞ্জাবের শিখদের ওপর, গোয়ার খ্রিষ্টানদের ওপর এবং কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদের মুসলিমদের ওপর যুদ্ধাবস্থায় দেখা গিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত তার নিজের লোকদের বিরুদ্ধে সেনা মোতায়েন করেছিল’। পাকিস্তানের সঙ্গে পরিস্থিতির তুলনা করে তিনি আরও যোগ করেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ভারতীয় রাষ্ট্রের মতো তার সেনাবাহিনীকে তার নিজের লোকের বিরুদ্ধে কখনও স্থাপন করেনি’।
সংবেদনশীল রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলার জন্য অরুন্ধতীকে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসাবে দেখা হচ্ছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই মতামত ধরে রেখেছেন যে, কাশ্মীরের ভারত থেকে পৃথক হওয়া দরকার।
ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৩ সালে তিনি নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত হওয়াকে একটি ‘দুঃখজনক ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।