দেশজনতা অনলাইন : আন্তর্জাতিক নতুন রুট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থাটিকে লাভজনক পর্যায়ে নিতে সরকারের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া দিল্লি রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। শিগগিরই বিমানের ঢাকা-চীনের গুয়ানজু, ঢাকা-সিউল-জাপান রুট চালু হতে যাচ্ছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ইতালির রোম, শ্রীলংকার কলম্বো, ভারতের মুম্বাই, মালদ্বীপের মালে এবং সৌদি আরবের মদিনা শহরে বিমানের রুট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এভাবে সিডনি, টরেন্টো ও জাকার্তা আন্তর্জাতিক রুট চালু করতে চাচ্ছে বিমান মন্ত্রণালয়। এসব শহরে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি যাত্রী নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন, উদ্যোগে এমনটাই বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্নিষ্ট দেশের বিমান মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। বছর তিনেকের মধ্যে সরকারের নেয়া মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। সংশ্লিষ্টরা এমন প্রত্যাশাই করছেন।
বিমানের লাভ-লোকসান নির্ধারণে স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। রাজশাহী, সৈয়দপুর, যশোরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরে সংস্কারের কাজ জোরেশোরে চলছে।
যাত্রীসেবার মান বাড়াতে নতুন উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে যোগ হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রিমলাইনার। সম্প্রতি তৃতীয় ড্রিমলাইনার গাঙচিল বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করেছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মহিবুল হক বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বিমানকে আরও লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বিমান এখন লাভজনক পর্যায়ে রয়েছে।
বিমানকে গতিশীল ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিমানের উন্নয়নের জন্য নেয়া মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজও শুরু হয়েছে। যেসব দেশে বহুসংখ্যক বাংলাদেশি বাস করছেন, সেসব দেশে আন্তর্জাতিক রুট চালুর জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
শিগগির নতুন নতুন রুটে বিমান চালু করা হবে বলেও জানিয়েছেন সচিব মহিবুল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন রুট হিসেবে চীনের গুয়াংজু শহরে, সিউল-জাপান রুটে বাংলাদেশ বিমান চলাচলে ইতিবাচক সম্মতি পাওয়া গেছে।
ইতিমধ্যে চীনের কেন্দ্রীয় বিমান কর্তৃপক্ষের অনুমোদন, জিএসএ নিয়োগ এবং স্লট পেয়েছে সরকার। উড়োজাহাজ কম থাকায় এতদিন এই রুটে বিমান উড়তে পারেনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস মনে করছে, এই রুটে সপ্তাহে তিনটি বিমানের ফ্লাইট চালু হলে বিপুলসংখ্যক যাত্রী হবে।
একইভাবে সৌদি আরবের মদিনায়, শ্রীলংকার কলম্বো ও মালে রুটে সপ্তাহে ২-৩টি ফ্লাইট চালু করলে লাভবান হবে বিমান।
সংশ্নিষ্টরা জানান, নতুন রুট খোঁজা এবং পুরনো রুট পুনরায় চালু হলে সেটি লাভজনক হবে কিনা- এসব নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। নতুন রুট হলে কতগুলো উড়োজাহাজ নতুন যুক্ত হবে সেটিও পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে।
পুরনো রুটগুলো কী কারণে বন্ধ হয়েছিল, তার নিবিড় বিশ্নেষণ হয় এসব বৈঠকে। আবার নতুন করে এসব রুট চালু হলে কতটুকু সফলতা পাওয়া যাবে সেটিও বিবেচনায় আনতে বলা হয়।
সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশি অধ্যুষিত দেশগুলোকে প্রাধান্য ও জনবহুল শহরকে বাছাই করবে কর্তৃপক্ষ।