তবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম বলেন, ‘আমরা ডাম্পিং গ্রাউন্ডগুলোতে তালিকা করে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছি। তারা সেটা তদারকি করছেন। মশার জন্ম যাতে না হয় সেজন্য নিয়মিত স্প্রে করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) আগারগাঁওয়ের দুটি ডাম্পিং গ্রাউন্ড ঘুরে দেখা গেছে, এসব জায়গার কয়েকবছর আগের ও বর্তমান চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক সময় ডাম্পিং গ্রাউন্ডগুলোতে ময়লা আবর্জনার পাশাপাশি লতা-পাতা জন্মে ঝোপ-ঝাড়ে পরিণত হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই চিত্র পাল্টেছে। পরিষ্কার করা হয়েছে গ্রাউন্ড। তবে ডাম্পিং করে রাখা ট্রাক, বাস, প্রাইভেটকার, লেগুনা ও সিএনজিগুলোর রাখা হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। যে কারণে গাড়িগুলোর ছাদ ও বডি নষ্ট হচ্ছে রোদ বৃষ্টির কারণে। ছাদ ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকছে গাড়ির ভেতরে। ফলে জমে থাকা পানিতে এডিসের মতো মরণঘাতী মশা জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আগারগাঁওয়ের দুটি ডাম্পিং গ্রাউন্ডের একটি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ সড়কের পাশে অন্যটি সরকারি সংগীত কলেজ সংলগ্ন। দুই গ্রাউন্ডে ২০-২২ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তাদের একজন কনস্টেবল মিজানুর রহমান। তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন সরকারি সংগীত কলেজ সংলগ্ন ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। এই গ্রাউন্ডে মোটরসাইকেল ছাড়া সব ধরনের গাড়ি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকা গাড়ির সংখ্যাও অনেক।
২০ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে ওই গ্রাউন্ডের সামনে থাকা পুলিশের একটি বক্সে বসে কথা হয় মিজানুর রহমানের সঙ্গে। এসময় মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য পুলিশের এই সদস্যকে কয়েল জ্বালাতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, ‘দিনের তুলনায় রাতে মশা বেশি। তবে বিকেল থেকেই মশার উপদ্রব শুরু হয়। রাতে অন্তত তিনটি কয়েল জ্বালিয়ে বসতে হয়। তাতেও কাজ হয় না। এই গরমে ফুল হাতা জামা পড়ে ডিউটি করতে হয় আমাদের।’
আগারগাঁও এলাকার অপর ডাম্পিং গ্রাউন্ডে দেখা গেছে, সেখানে মোটরসাইকেলের সংখ্যা অনেক বেশি। সঙ্গে অন্যান্য গাড়িও রয়েছে। অনেক বছর ধরে বিপুল সংখ্যক ট্রাক-প্রাইভেটকার স্তুপ করে রাখতে দেখা গেছে ওই গ্রাউন্ডে। এছাড়া এই গ্রাউন্ডের একপাশে পুরনো মোটরসাইকেলগুলো ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ফলে এসব গাড়ির ভেতরে মশা জন্ম নিচ্ছে কিনা তা দেখার সুযোগ হয়নি। তবে মশা জন্ম নেওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে এসব গাড়ির মধ্যে বা নিচেও।
দুই গ্রাউন্ডের দায়িত্বে আছেন উপ-পরিদর্শক (ট্রাফিক) আনিসুর রহমান। তিনি জানান, দুই-তিন বছর আগে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ভেতরে প্রবেশ করাই উপায় ছিল না। ময়লা আবর্জনা লতাপাতায় পূর্ণ ছিল। এখন অনেক পরিষ্কার। মশা জন্মানোর জায়গা কম।
আনিসুর রহমান বলেন, ডাম্পিং গ্রাউন্ডে মশা মারার জন্য আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা রয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনে চিঠি দিয়ে ওদের মাধ্যমে স্প্রে করানো ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিঠি দেওয়ার পর সিটি করপোরেশন থেকে লোকজন এসে স্প্রে করে গেছে। আমাদের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এখনও কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি।
ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডগুলোতে আজও (২০ আগস্ট) ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে। আশপাশের ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করে যানবাহনগুলোর ভেতরে স্প্রে করা হয়েছে। নিয়মিত এ পরিষ্কার অভিযান চলবে।