ঝিলপাড় বস্তির বাসিন্দা পোশাক শ্রমিক দুলাল বলেন, ‘আমার ছোট ছোট দুই মেয়ে। স্ত্রী মারা গেছে দেড় বছর আগে। বস্তিতে আমরা ৯টি ঘর ছিল। একটিতে সন্তানদের নিয়ে থাকতাম, বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া ছিল। সব পুড়ে গেছে। কিছুই বের করতে পারিনি। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।’ তিনি বলেন, ‘দুই মেয়ের একজনকে বাড়িতে আগুনের পর রেখে এসেছি। আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস আসতে দেরি করেছে। আসার পর পানি শেষ হয়ে যায়। এ সময় সব বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’
দুলালের বাবা স্বাধীনতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর থেকেই তারা এই এলাকায় বাস করছেন। দুলাল আরও বলেন, ‘সকালে একবার চলন্তিকা বস্তিতে আগুন লেগেছিল ফরিদের ঘরে। সেই আগুন নেভানোর পর রাতে আবার সেখান থেকেই আগুন লেগেছে।’
ঝিলের ওপর মাটি ভরাট করে বানানো বাঁশ ও টিনের ছোট ছোট হাজার হাজার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মানুষ কোনোরকম প্রাণ নিয়ে বের হয়েছেন। সবার চোখে-মুখে আতঙ্ক। ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তারা।
ডলি বেগম নামে একজন বাসিন্দা বলেন, ‘গোলার মতো আগুন জ্বলেছে। মনে হয়েছে, কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে।’ ছেলেদের নিয়ে একটি বাসায় থাকতেন ডলি বেগম। তার মোট তিনটি ঘর ছিল, বাকি দুটি ঘর ভাড়া দিতেন। তাও পুড়ে গেছে। সাভারের আমিন বাজার থেকে এখানে প্রায় ৩০ বছর আগে এসেছেন। আমিন বাজারে তাদের কিছু নেই।
রাজিয়া বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘কেরোসিন দিয়ে আগুন দিয়েছে। গরিবকে এখানে থাকতে দেবে না। তাই সব পুড়িয়ে দিয়েছে।’
বরিশালের বাকেরগঞ্জের মিতু আক্তার বলেন, ‘এ রকম আগুন জীবনে দেখিনি। সব পুড়ে গেছে ।’ মিতুরও সন্দেহ তাদের বস্তিতে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
তবে নাশকতার বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও তথ্য নেই। ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোশতাক আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা আগুন নেভাতে ব্যস্ত। এ রকমের কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি।’