২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৫৭

জাবিতে র‌্যাগিংয়ের নামে জুনিয়র শিক্ষার্থীর কান ফাটালো সিনিয়ররা

জানা যায়, সোমবার রাত ১টার দিকে জাবির ২য় বর্ষের ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু হলের গণরুমে যায়। এসময় ২য় বর্ষের শিহাবসহ ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার শাকিল ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফয়জুল নিরব নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। একপর্যায়ে গণিত বিভাগের ৪৮ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থী ফয়সাল আলমকে কয়েকটি থাপ্পড় মারে মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মোঃ শিহাব। ফলে ফয়সাল আলমের কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

তারপর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হাসপাতালে গিয়েও র‌্যাগাররা হুমকি দিয়ে আসে। থাপ্পড় ও র‌্যাগের বিষয়ে অভিযোগ করলে আর হলে উঠেতে দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। এই ভয়ে রাতে প্রায় অর্ধশত নবীন ছাত্র হলে না গিয়ে অন্য হলে বন্ধুদের সাথে এবং খোলা আকাশের নিছে অবস্থান করে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ফয়সাল আলম বলেন,‘শাকিল ভাই গণরুমে এসে আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করে। আমার সর্দি-কাশি থাকায় জোরে পরিচয় দিতে পারছিলাম না। এজন্য তারা আমাকে প্রথমে মুরগি (গণরুমের এক প্রকার নির্যাতন) হতে বলে। আমি চার-পাঁচ বার মুরগি হই। তারপর আবার জানালার গ্রিল ধরে ঝুলে থাকতে বলে। কিন্তু আমার হাতের তালু কাটা থাকায় তাদেরকে অস্বীকৃতির কথা জানাই। এ সময় শিহাব ভাই আমাকে কিল-ঘুষি দিতে থাকে। একপর্যায়ে তার এলোপাতাড়ি থাপ্পড়ে আমার কান ফেটে যায়। তারপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বন্ধুরা আমাকে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। বিষয়টা কাউকে জানালে শিহাব ও নীরবসহ চার-পাঁচজন মেডিকেলে এসে আমাকে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়ে যায়। জাবি মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাভারের এনাম মেডিকেলে যেতে চাইলেও তারা আমাকে বাধা দেয়। পরদিন বিকেলে অবস্থা খারাপ হলে বন্ধুরা আমাকে এনাম মেডিকেলে ভর্তি করে।’

এ বিষয়ে মূলহোতা অভিযুক্ত শিহাবের সাথে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে আরেক অভিযুক্ত ফয়েজুল নীরব বলেন, ফয়সালের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে দেরি করে পরিচয় দেয়। তখন আমরা তাকে কিছু নির্দেশনা দিলে তা পালনে অস্বীকার করে। আমাদের ব্যাচমেট শিহাব ফয়সালকে মেরে বসে। তবে বিষয়টি এত মারাত্মক হবে, তা আমরা বুঝতে পারিনি।

এদিকে এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসের সচেতন মহলে ক্ষোভ তৈরী হলে বুধবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র‌্যাগিয়ের সঠিক বিচারের আশ্বায় দেয় এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তা কামনা করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন,‘ভূক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী বুধবার রাতে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে। এখন আমরা এই বিষয়ে দ্রুত কাজ করছি। তদন্ত প্রতিবেদন তৈরীও শেষ পর্যায়ে আছে। যথাসম্ভব আজ-কালকের মধ্যে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিবো।’

প্রকাশ :জুলাই ২৫, ২০১৯ ৪:৫৩ অপরাহ্ণ