২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৫৬

পিরোজপুর জেলা জজশিপে কমছে মামলার জট

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পিরোজপুর জেলা জজশিপে বিচারকদের অপ্রতুলতা থাকা সত্ত্বেও ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ফলে মামলার জট দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করেছে। ফলে বেশ স্বস্থিতে রয়েছেন জেলার হাজার হাজার বিচার প্রার্থী। জেলা ও দায়রা জজের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলার আইনজীবীসহ আদালতের অন্যান্য বিচারক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।আদালত সূত্র জানায়, জেলা জজশীপে মোট ২০টি বিচারকের পদ থাকলেও বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা রয়েছে ছয়টি। ফলে আদালতের ওই শূন্য পদের যায়গায় বিচারকদের সংকট থাকায় অতিরিক্ত বিচারকার্য চালাতে তাদেরকে হিমশিম খেতে হয়। এসব শূন্য পদগুলোর মধ্যে সহকারী জজ পদে দুটি, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে দুটি এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে দুটি রয়েছে।  দ্রুত মামলা হ্রাসের ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী জজ মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর জানান, বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম কিবরিয়া ২০১৫ সালের মার্চে অত্র জেলায় যোগদানের পর থেকেই সাধারণ বিচার প্রার্থীরা যে প্রকারে অল্প সময়ের মধ্যে ন্যায্য বিচার পান এবং অহেতুক অর্থ ও সময় নষ্ট না করে আনিত অভিযোগ থেকে মুক্তি পান সে লক্ষ্যেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিধায় অল্প সময়ের মধ্যেই মামলার জট খুলে যাচ্ছে।আদালতে দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলা প্রসঙ্গে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. মামুন আলী জানান, জেলা জজশিপে এপ্রিল ২০১৭ মাসের বিচারাধীন মামলার সংখ্যা সিভিল ও ফৌজদারী মিলে সর্বমোট ১৪ হাজার ৭১৬টি। যার মধ্যে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ৪৪২টি এবং বিচারাধীন মামলার মামলার সংখ্যা ১৪ হাজার ২৭৪ টি। এছাড়া ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল মামলা ২ হাজার ৮৬০টি রয়েছে। যার মধ্যে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ৫৬টি এবং বিচারাধীন ২ হাজার ৮০৪টি।অন্যদিকে, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অনিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ৭ হাজার ৬৩৮টি। যার মধ্যে নিষ্পত্তিকৃত ১৭৫টি ও বদলিকৃত ১৮৭টি এবং বিচারধীন রয়েছে ৭ হাজার ২৫৬টি মামলা।জেলা জজশিপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আবু জাফর মোল্লা জানান, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির প্রথম ধাপ হচ্ছে তদন্ত সঠিকভাবে নিরুপণ করে সময়মতো রির্পোট দেয়া এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকাটা অপরিহার্য। ফলে যত দ্রুত সাক্ষ্য শেষ হবে, তত দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি হবে।

অন্যদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, একটি মামলা আদালতে দায়ের হওয়ার পর বিচারক পর্যন্ত যেতে প্রায় এক থেকে দেড় বছর বা এরও বেশি সময় লেগে যায়। এরপর সাক্ষ্য নেয়ার জন্য প্রস্তুত হলে দেখা যায় সাক্ষীরা ঠিকানা বদল করে অন্যত্র চলে যান বা ওই স্থানের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে অন্য স্থানে বসবাস করেন, আবার যথা সময়ে তাদেরকে পাওয়া যায় না। কেউ কেউ সাক্ষ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানান। ফলে অধিকাংশ সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা সম্ভব হয় না। ফলে মামলাগুলো আর আগায় না।  পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন জানান, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ মোতাবেক সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অর্থাৎ, রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি অধিকার হলো আইনের দৃষ্টিতে সমতা। পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম কিবরিয়া এখানে যোগদানের পর থেকে আদালত অঙ্গন থেকে সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অপসংস্কৃতি দূর করেছেন। তার দূরদর্শীতার কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে জটিলসহ সকল ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হতে শুরু করেছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :জুন ৯, ২০১৭ ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ