২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:২৫

উচ্চ ব্যয়ে শ্রমিক রফতানি,১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যক্রম স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সৌদি আরবসহ মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোতে উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ে শ্রমিক রফতানির অভিযোগ উঠেছে জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ করছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ গোলাম মসীহ নিজে।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো প্রতিবেদন ও মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এই সেক্টরের শীর্ষ ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন (বায়রা) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস’র সহসভাপতি ও গ্রিনল্যান্ড ওভারসিসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাইয়ের নামও রয়েছে। বাকি রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে গফগিফট, সুভাষ বিজয়, মুসা ওভারসিস, রাব্বী ইন্টারন্যাশনাল, জিএমজি ও.সন্স, তুর্কি অ্যাসোসিয়েটসের নাম রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
গত রাতে গ্রিনল্যান্ড ওভারসিসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভারত থেকে টেলিফোনে  বলেন, এটা মনে হচ্ছে অ্যাম্বাডেসর সাহেব ওনার ওয়েতে করেছেন। এখন আমাদের মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আইনসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা করছি। এর পাশাপাশি আমরা বায়রা থেকেও এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সরেজমিন খোঁজ নিতে যাবো। এখানে আসলে কতটুকু কী হয়েছে? তিনি বলেন, আমরা কোনো ধরনের চাপে নেই। যদি কোনো সমস্যা থেকেই থাকে তাহলে সেটি আমরা সমাধান করব।
এর আগে গত মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত কালো তালিকাভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে কর্মী প্রেরণ বন্ধ রাখা সংক্রান্ত এক চিঠি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, উপযুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, কালো তালিকাভুক্ত কোন রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক কোনো কর্মী যাতে সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্যে গমন করতে না পারে এ বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এই চিঠি ইস্যু হওয়ার পরই বায়রার পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সাথে দেখা করেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি’র সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
এর আগে গত বুধবার রাতে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ গোলাম মসীহের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি  বলেন, ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা করে নিয়ে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠাচ্ছেন। এসব বিষয় মন্ত্রণালয়ের অবশ্যই মনিটরিং করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকায় এখানে যদি লোক আসতে পারে তাহলে কেন আমাদের লোকেরা আসতে পারবে না। এর মধ্যে শ্রমিকের সমস্যাও আছে।
এ ব্যাপারে বায়রার সহসভাপতির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা লাখ লাখ লোক পাঠাচ্ছি। সেখানে দু-চারজনের সমস্যা হতেই পারে। এমনটি হয়ে থাকলে সেটি আমরাই সমাধান করব। সব সময় আমরাই করে আসছি। ৬-৮ লাখ টাকা নিয়ে শ্রমিক পাঠানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গোলাম মসীহ সাহেব মিথ্যা কথা বলছেন। রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা কথা বলছেন? কোন রিক্রুটিং এজেন্সি এত টাকা নিচ্ছে না। এখানে ওনার কোনো স্বার্থ আছে! না হলে তিনি কেনো এমন অভিযোগ করছেন?

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :জুন ৯, ২০১৭ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ