দেশজনতা অনলাইন : আগামী রোববার থেকে ঢাকার প্রধান তিনটি সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ হচ্ছে। রাজধানীর কুড়িল-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আজিমপুর ও সায়েন্সল্যাব-শাহবাগ রুটে কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না।
বুধবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটির এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, কুড়িল-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আজিমপুর ও সায়েন্সল্যাব-শাহবাগ রুটে রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীতে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিটিসিএর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আজ ছিল সেই কমিটির প্রথম বৈঠক।
তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা ও হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অ-অনুমোদিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর তিনটি রুটে যেমন, কুড়িল-খিলগাঁও-রামপুরা হয়ে সায়দাবাদ, গাবতলী-আসাদগেট-মিরপুর রোড হয়ে আজিমপুর এবং সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে রিকশার পাশাপাশি অন্য সব অবৈধ যানবাহন আগামী ৭ জুলাই অর্থাৎ রোববার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, ‘সড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজ নিজ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অপসারণ করবে।’
তিনি আরো বলেন, যেসব ভবন অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে যেগুলো ফুটপাতে পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে সেগুলো রাজা রামমোহন আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ভেঙে দেবে। সার্বিক পরিস্থিতি পরবর্তী সাত দিন আমরা পর্যবেক্ষণ করে আর একটি বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
এ সময় মেয়র আশ্বাস দিয়ে বলেন, রিকশা চলাচল বন্ধ হলে আমাদের নগরবাসীদের যেন কোনো ধরনের দুর্ভোগে পড়তে না হয় সেজন্য বিআরটিসিকে বলা হয়েছে। এবং তারা আশ্বাস দিয়েছে আমাকে নগরবাসী কোনো দুর্ভোগে পড়তে না হয় এজন্য সর্বাত্মক সহায়তা করবে বিআরটিসি এবং পরিবহন মালিক সমিতি। যাত্রীদের চলাচলে সড়কে পর্যাপ্ত পরিমাণ যানবাহনের ব্যবস্থা তাদের পক্ষ থেকে রাখা হবে।
বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া রিকশা বন্ধ নয়:
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ ও সদস্য সচিব জুলফিকার আলী বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কে রিকশা, লেগুনা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষকের সারা বছরের কাজের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে কাজের সন্ধানে মানুষ গ্রাম থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় বড় শহরে ভিড় করেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কাজের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অসহায় মানুষ জীবনধারণের জন্য ঢাকায় এসে রিকশা চালানোর মতো অমানবিক পরিশ্রমের কাজসহ বিভিন্ন মানবেতর পরিশ্রমের কাজে যুক্ত হন।
নেতারা বলেন, ঢাকায় যানজটের জন্য দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ন ও অব্যবস্থাপনা। সেদিকে হাত না দিয়ে গরীব মানুষের বেঁচে থাকার বিকল্প ব্যবস্থা না করে বিভিন্ন সড়ক বন্ধের সিদ্ধান্ত গরিব মেহনতী মানুষের জীবন আরো দুর্বিসহ করে তুলবে।
বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া বিভিন্ন সড়কে রিকশাসহ যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।