ট্রেন্ট ব্রিজে সবশেষ ২০১০ সালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল বাংলাদেশ। আগেরটি আরও আগে, ২০০৫ সালে। অতীত ভুলে রবিন হুডের শহরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নতুন ইতহাস গড়ার মিশনে নামতে প্রস্তুত মাশরাফিরা।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয় কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে। ২০০৫ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ২১ ম্যাচের লড়াইয়ে ওই একবারই জিততে পেরেছে টাইগাররা। দুটি ম্যাচে অবশ্য ফল হয়নি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ২১ ওয়ানডের মধ্যে তিনটি ম্যাচ আছে বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরেছিল। ২০০৭ সালে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ উইকেটের। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের ম্যাচটি অবশ্য বৃষ্টির কারণে মাঠেই গড়ায়নি। বিশ্ব আসরে আজ চতুর্থবার মুখোমুখি হচ্ছে দল দুটি। সেমিফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে এই ম্যাচ জেতাটা খুব জরুরি মাশরাফিদের।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি যে সহজ হবে না, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণের চেয়েও ধারালো অজিদের বোলিং। প্যাট কামিন্সের বৈচিত্র্যময় বোলিং ভোগাতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সেই সঙ্গে মিচেল স্টার্ক ও কেন রিচার্ডসন তো আছেনই। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ নিয়ে তাই সতর্ক মাশরাফি, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা বৈচিত্র্যময় বোলিং করে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। আমাদের অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তাহলেই কেবল আমাদের পক্ষে ফল আনা সম্ভব।’
বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সময় পার করছেন সাকিব আল হাসান। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সাকিবের অপরাজিত ১২৪ রানে ভর দিয়ে বাংলাদেশ ৫১ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পায়। প্রভাব বিস্তার করা এমন জয় বাংলাদেশের কমই এসেছে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দারুণ ছন্দে আছেন সাকিব। তাই তাকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি, ‘সাকিব ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছে। তাকে আমাদের আটকাতে হবে। সাকিবকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। এখন কেবল মাঠে তা বাস্তবায়ন করার পালা।’
ট্রেন্ট ব্রিজেই ওয়ানডে ক্রিকেটের সবোর্চ্চ দুটি স্কোর হয়েছে। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে এখানকার উইকেট খানিকটা রহস্যময় আচরণ করছে। চলতি বিশ্বকাপে এই ভেন্যুতে তিনটি ম্যাচ হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে দলগুলোর। প্রথম ম্যাচে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। পরের ম্যাচে এই মাঠেই ৩৪৮ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ইংল্যান্ড ৩৩৪ রানে থেমে যায়। তৃতীয় ম্যাচে অন্যরকম উইকেটের স্বাদ পায় অস্ট্রেলিযা। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে মাত্র ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত নাথান কোল্টার-নাইলের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২৮৮ রান করতে সমর্থ হয়।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে চোট থাবা বসিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাম্পে। ছোটখাটো চোট আগে থেকেই ছিল, এবার সেই তালিকায় যোগ দিয়েছেন সাইফউদ্দিন। পিঠের চোটে ভুগছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাই একাদশে একটি পরিবর্তনের জোর সম্ভাবনা। সাইফ না খেললে তার জায়গায় এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবার মাঠে নামা হয়ে যেতে পারে রুবেল হোসেনের। আরও একটি পরিবর্তনের গুঞ্জনও আছে। মোসাদ্দেক হোসেনকে বসিয়ে খেলানো হতে পারে সাব্বির রহমানকে।