২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:২৪

বর্তমান সরকারকে আমরা বৈধ মনে করি না : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান সরকারকে দখলদার মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা সরকার গঠন করেছে তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে যারা সংসদে গেছে তাদের আমরা বৈধতা দেইনি।

বুধবার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির উদ্যোগে পুরানা পল্টনের মুক্তিভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতিকের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরাম সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাগপার সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আসাদুর রহমান খান, কল্যাণ পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট আজাদ মাহবুব, মো. ইলিয়াস, ফোরকান ইবরাহিম, সাহিদুর রহমান তামান্না, নুরউদ্দিন, আলী হোসেন ফরায়েজী, মাহমুদ খান, শামসুদ্দিন পারভেজ, নুরুল কবির ভুইয়া পিন্টু, রাশেদ ফৈরদৌস সোহেল, আল আমিন ভুইয়া রিপন, শেখ এনামুল হাসান তানিম, জামায়াত নেতা আতাউর রহমান প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা আজকে পার্লামেন্ট গঠন করেছেন তারা কেউ নির্বাচিত প্রতিনিধি বলে আমরা মনে করি না। জনগণ তাদেরকে ভোট দিতে পারেননি। একইভাবে তাদের দ্বারা যে সরকার হয়েছে সেই সরকারও আমরা মনে করি যে, তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। যে কারণে আমরা আমাদের ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সম্মিলিত বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে এই সরকারকে কখনোই একটা লেজিটিমেট সরকার হিসেবে স্বীকার করিনি, এই পার্লামেন্ট বৈধ হিসেবে স্বীকার করিনি। কিন্তু বাস্তবতা এই জগদ্দল পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি রেখেছে। তিনি দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে কারাবন্দি হয়ে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকার্মীদের নামে মিথ্যা মামলা, গায়েবী মামলা এবং গুম-খুন করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে বন্দি করেছে। দেশের এক লাখেরও বেশি মামলায় প্রায় ২৫ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীকে জড়ানো হয়েছে। রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সরকারের গায়েবী মামলায় জেল জুলুমের শিকার হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনী সব দলীয় করণ করা হয়েছে। গণমাধ্যমও এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। ফলে মানুষ সত্য কথা জানতে পারে না। তিনি বলেন, এ অবস্থা দেখে আমাদের হতাশ হলে চলবে না। হতাশা কখনো আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, অগণিত নেতা-কর্মী যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদেরকে মুক্ত করা এবং এই দুঃশাসন অবসান ঘটানো। যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই বন্ধ হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। একইসাথে অন্যায় দু:শাসন ও জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে আমাদেরকে এ রমজানে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

জেনারেল ইবরাহিম বলেন, দেশের একটি ঐতিহাসিক প্রয়োজনে চারদলীয় জোট পরে ২০ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে। দীর্ঘ আট বছর ধরে কল্যাণপার্টি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে রয়েছে। এ সময়ে অনেক দলের খন্ডিতাংশ জোট ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু আমরা রয়ে গেছি। আগামীতেও ২০ দল জোট অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রকাশ :মে ৩০, ২০১৯ ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ