অনলাইন
ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র গণমাধ্যমকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম ও উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি। ওই সুপারিশের ভিত্তিতেই ওসি মোয়াজ্জেমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো বলে সূত্র জানায়।
পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে জমা দেওয়া হয়। কমিটির প্রতিবেদনে মোয়াজ্জেম ও ইকবালকে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। কমিটি বলেছে, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকারেরও গাফিলতি ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেনীর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও এসআই ইকবাল হোসেন নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা চালান। এ কাজে তাঁরা একে অন্যকে সহযোগিতা করেছেন। আর পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার সকাল ১০টায় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে যাননি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে রওনা দেন। পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের নির্দেশে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের এসআই মো. ইউসুফের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পি কে এনামুল কবীর তাঁর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি বলেও মন্তব্য করেছে কমিটি। তাঁর ব্যাপারে কমিটির পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা।
উল্লেখ্য,গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেন মাদ্রাসার একদল ছাত্রছাত্রী। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ও মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নুসরাতের পরিবারের অনাস্থার কারণে প্রথমে ওসি মোয়াজ্জেমকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ এপ্রিল পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দপ্তর। ৩০ এপ্রিল প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করা হয়।