নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে শনিবার সারা দিন দেশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকতে পারে। আজ শনিবার সকালে যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড়টি আগের তুলনায় অনেকটা দুর্বল হয়ে আঘাত হানবে বাংলাদেশে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। সচিবালয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ফণীর সর্বশেষ অবস্থান ও প্রস্তুতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
একই সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কবল থেকে নিরাপত্তার লক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলাগুলোর ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের ওডিশা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে ভারতের উপকূলীয় ওডিশা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার উপকূলে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।