দেশজনতা অনলাইন : সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা তা জানানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে কমিটি গঠন নিয়ে তালিকা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সোমবার রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ রিটটি দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনা সংবলিত হাইকোর্টের ২০০৯ সালের রায়ের আলোকে কোনো আইন না হওয়া পর্যন্ত এই রায়টি (২০০৯ সালের) আইন হিসেবে মানতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আবেদন জানিয়েছি।
এ ছাড়া রিটে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও আইন মন্ত্রণালয়কে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট ২১জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারেও জানান রিটকারী আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিকনির্দেশনা চেয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
ওই রিট নিষ্পত্তি করে ২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি রোধে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্র গঠন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করার কথাও বলা হয়।
রায়ে বলা হয়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এই অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এ ছাড়া কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন। এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরন ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না।