২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:১৩

সাউদাম্পটনে লিভারপুলকে ডুবতে দিলেন না সালাহ

খেলা ডেস্ক

চ্যাম্পিয়নস লিগের বদলে হলেও প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিততে চান বলে জানিয়েছিলেন মোহাম্মদ সালাহ। পরম আরাধ্য সেই প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার স্বপ্নটা আরেকটু হলে সাউদাম্পটনে মুখ থুবড়ে পড়ত। সেই সালাহই বাঁচালেন লিভারপুলকে। ম্যাচের ১০ মিনিট বাকি থাকতে দুর্দান্ত এক গোলে লিভারপুলকে এগিয়ে দিলেন। এরপর জেমস হেন্ডেরসনের গোলে স্বস্তিটা আরও বাড়ল লিভারপুলের ডাগ আউটে। শেষ পর্যন্ত সাউদাম্পটনকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থানটা আবারও দখলে নিল লিভারপুল। ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে লিভারপুলের পয়েন্ট ৮২।

মৌসুমের পরের অর্ধটা ভালো যাচ্ছিল না সালাহর। ম্যাচ জেতানো তেমন পারফরম্যান্সও ছিল না। সাউদাম্পটনেও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। কিন্তু একটা মুহুর্তই বদলে দিল সব। কে জানে সেটা হয়ত হয়ে যেতে পারে এবারের শিরোপা নির্ধারনী মুহুর্তও! সাউদাম্পটনের একটি কর্নার থেকে নিজ অর্ধেই বল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর ক্ষীপ্র গতিতে নিমিষেই চলে গেলেন বক্সের সামনে। দুই ডিফেন্ডারের মাঝে দিয়ে বাম পায়ে উড়িয়ে মারা বাঁকানো শটে গোল করে লিভারপুলের শিরোপা স্বপ্ন বাঁচিয়ে তোলেন সালাহ। দুর্দান্ত ওই গোলে একটি রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেলেছেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড। ৬৯ ম্যাচ খেলে লিগে গোলের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেছেন তিনি।

সালাহর ওই গোলের ৬ মিনিট পর বদলি হেন্ডেরসন করেন লিভারপুলের তৃতীয় গোলটি। রবার্তো ফিরমিনোর ক্রস থেকে পেনাল্টি স্পটের কাছাকাছি জায়গা বল পান। বাকি কাজটা এরপর সহজেই সেরেছেন তিনি। কিন্তু সেন্ট মেরিস স্টেডিয়ামে লিভারপুলের কাজটা শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৯ মিনিটে শেইন লং এর গোলে পিছিয়ে পড়েছিল লিভারপুল।

বামদিক থেকে পিয়েরে হবার্গের ক্রস লিভারপুল ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে খুঁজে পায় ফাঁকায় থাকা লংকে। আচানক বল পেয়ে ভুল করেননি লং, তিনিও প্রিমিয়ার লিগের গোল নিয়ে গেছেন ৫০ এ। অবশ্য সেটা বাড়িয়ে নেওয়ারও সুযোগ পেয়েছিলেন এরপর। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করেছেন, বামদিকে থেকে আসা ক্রস পা ছোঁয়াতেই পারেননি। নইলে লিডটা দুই গোলেরও হতে পারত সাউদাম্পটনের।

পয়েন্ট তালিকার ১৬ নম্বরে থাকা সাউদাম্পটন ৪৫৪ মিনিট ধরে লিভারপুলের বিপক্ষে গোলই করতে পারেনি এর আগে। সেই তুলনায় প্রথমার্ধে পাওয়া সুযোগগুলো হাতছাড়া হলেও, এক গোলই ভরসা যোগাচ্ছিল সেন্টদের। গোলরক্ষক আঙ্গাস গানও নাবি কেইতার হেড আটকে দিয়ে লিভারপুলকে আটকে দিলেন এরপর। কিন্তু ৩৬ মিনিটে আর পারলেন না। ওই আক্রমণে বেশ কয়েকবার ক্রস করেছিল লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত অ্যালেক্সান্ডার আর্নল্ডের ক্রস হলো সফল। কেইতাই হেডে গোল করে লিভারপুলকে ফিরিয়ে আনলেন ম্যাচে। আর একটু আগে সফল হওয়া গান, ধরতে ধরতেও বল ক্লিয়ার করতে না পারার আফসোস নিয়ে গেলেন বিরতিতে।

দ্বিতীয়ার্ধে সাউদাম্পটনের দুই সেন্টারব্যাক ইয়োশিদা ও ভেস্টেরব্যাক দুইজনই হতাশ করে চলেছিলেন মানে-ফিরমিনোদের। পুরো ম্যাচে দুইজনই সমান ১০ টি করে ক্লিয়ারেন্স করেছেন। এর মধ্যে মায়া ইয়োশিদা দ্বিতীয়ার্ধে ছিলেন দারুণ। রবার্তো ফিরমিনোর শট ব্লক করে সেন্টদের স্বস্তি দিয়েছিলেন তিনি। তবে ৫৮ মিনিটে একবার ঘরের সমর্থকদের অস্বস্তিতেও ফেলে দিয়েছিলেন। কেইতাকে ডিবক্সের ভেতর করা ইয়োশিদার ট্যাকেলে অবশ্য রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি, তাই হাপ ছেড়ে বেঁচেছিল সেন্ট মেরিস।

কিন্তু লিভারপুল তো এবার নেমেছে অন্য মিশনে! ম্যাচ জমিয়ে শেষ মুহুর্তে গিয়ে জেতাটাও অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। এবার সেটা হলো সালাহর হাত ধরে। তাতে ৬ ম্যাচের গোলখরাও কাটালেন সালাহ। এই মৌসুমে হারার মতো অবস্থা থেকেও লিভারপুলের অর্জন হলো ১৬ পয়েন্ট। সেটা খুব অনুমিতভাবেই লিগের সর্বোচ্চ।

প্রকাশ :এপ্রিল ৬, ২০১৯ ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ