খেলা ডেস্ক
কর্নার থেকে উড়ে আসা বলটা এসে পড়ল মো সালাহর পায়ে। গোলমুখে হেড করলেন সালাহ, অন্য যে কোনো দিন হয়তো সেটি আটকে দিতেন লরিস। কিন্তু আজকে দিনটা ছিল লিভারপুলের, লরিস সেভ করতে গিয়ে সেটি তুলে দিলেন অলডারউইরেল্ডের পায়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলেন, বল ঢুকে গেছে লাইনের ভেতর; গোল! আরও একবার শেষ মুহূর্তে অ্যানফিল্ডে জয় পেল লিভারপুল। সিটিকে টপকে উঠে গেল শীর্ষে, শিরোপার লড়াইটা থাকল জমজমাটই। ৩৭ ম্যাচ ধরে অ্যানফিল্ডে অপরাজিতই রইল লিভারপুল।
টটেনহাম অবশ্য নিজেদের দোষ দিতেই পারে। শেষ ১০ মিনিটে অমন দুইটি সুযোগ নষ্ট না করলে তো দিনটা তাদেরও হতে পারত। ৮৫ মিনিটে দুর্দান্ত একটা প্রতি-আক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ পেয়েই গিয়েছিলেন সিসোকো, কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে শটটা চলে যায় বারের অনেক ওপর দিয়ে। ৮৮ মিনিটে ডেলে আলীর বাঁকানো শটও হয়তো অন্য যে কোনো দিন পোস্টে ঢুকে যেত। কিন্তু ওই যে, আজকের দিনটা টটেনহামের ছিল না! দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ খেলেও তাই গোল পাওয়া হলো না তাদের।
শুরুটা ভালো করেছিল টটেনহামই। তবে নিজেদের একটু গুছিয়ে নেওয়ার পর ১৬ মিনিটে গোলটা পেয়েই যায় লিভারপুল। বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে স্বপ্নের মতো একটা ক্রস করেছেন রবার্টসন, সেটা থেকে গোল না করতে পারলে রবার্তো ফিরমিনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারতেন না। সেটা করেননি, লিভারপুল পেয়ে গেছে প্রথম গোল। রবার্টসনের এই মৌসুমে অ্যাসিস্ট হল নয়, প্রিমিয়ার লিগে শুধু দুজন ডিফেন্ডারই এক মৌসুমে এর চেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট অরেছেন। (১৯৯৪-৯৫ সালে অ্যান্ডি হিঞ্চলিফ ও ২০১০-১১ মৌসুমে লেইটন বেইন্স।)
গোলের পর পরেই আরেকটি গোলের উৎস প্রায় হয়েই গিয়েছিলেন রবার্টসন। এবার তাঁর ক্রস ক্লিয়ার হয়ে ফিরে আসে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আরনল্ডের কাছে। বক্সের বাইরে থেকে লিভারপুল ফুলব্যাকের নেওয়া দারুণ শট একটুর জন্য চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ৩৩ মিনিটে ডেলে আলির শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। তবে লিভারপুলেরই প্রাধান্য ছিল বেশি, ৩৮ মিনিটে সাদিও মানের শট পোস্টে রাখতে পারলে আরও এগিয়ে যেতে পারত লিভারপুলই।
৪৮ মিনিটে ভার্জিল ফন ডাইকের হেড চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে ৩-৫-২ ফর্মেশন থেকে সরে আসে স্পার্স, খেলায়ও ধার বাড়ে। ৫৬ মিনিটে হ্যারি কেনের শট ঠেকিয়ে দেন এলিসন, ফিরতি বলে এরিকসেনের শট রবার্টসনের গায়ে লেগে চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে।
৬৯ মিনিটে শেষ পর্যন্ত গোলটা পেয়েই যায় টটেনহাম। হ্যারি কেনকে ফাউল করা হলে খুব দ্রুতই ফ্রি কিক নেন, সেটি খুঁজে নেয় ডান প্রান্ত দিয়ে ওভারল্যাপ করে উঠে আসা কাইরন ট্রিপিয়েরকে। ট্রিপিয়েরের পাস থেকে বল পান এরিকসন, তাঁর ক্রসটা কিছুটা সৌভাগ্যক্রমেই এসে পড়ে লুকাস মৌরার পায়ে। এত কাছ থেকে সুযোগটা হারাননি।
এরপর লিভারপুল একটু গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে। ৭৬ মিনিটে আলেকজান্ডার আরনল্ডের বাঁ পায়ের বাঁকানো শটটি বারের ওপর পাঠিয়ে দেন লরিস। ৮১ মিনিটে ডিভক অরিগির নেওয়া ফ্রি কিক স্পারস মানব দেয়ালে বাধা পেয়ে দিক বদল করে চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। কিন্তু শেষে দ্বিতীয়ার্ধের সেরা দুই সুযোগ পেয়েছিল স্পার্সই। সেটা কাজে লাগাতে না পারার মূল্যই দিতে হলো, তাও আবার আত্মঘাতী গোল দিয়ে। পয়েন্ট তালিকার তিনে থাকলেও তাদের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ম্যান ইউনাইটেড, আর্সেনাল ও চেলসি।