২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১১:৫৬

এফআর টাউয়ারের ১৮’র পরের সব তলাই অনুমোদনহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বনানীর এফ আর টাওয়ারের ১৮ তলার পরের সবগুলোই অনুমোদনহীন। ভবনটি ১৯৯৬ সালে অনুমোদন দেয়া হয়। ২০০৫ সালে ভবনের মালিক রাজউকে এর নকশার একটি কপি দাখিল করে। সে কপিটি প্রথমটির সাথে মিল ছিল না। ভবনটির অবৈধ অংশ ভেঙ্গে দিতে রাজউক একটি নোটিশ দিয়ে রেখেছিল। ভবনটির ভূমি মালিক রাজউকের নোটিশ উল্লেখ করে ভবনটিতে দুঘৃটনা ঘটতে পারে বলে ভবনের নিচে একটি নোটিশ টানিয়েছিলেন তিনি। নোটিশে ভবনটিতে নাশকতা, ভূমির ক্ষতি সাধন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ভূমি মালিক।

ভবন নির্মাণে যেসব অনিয়ম হয়েছে সেসব উল্লেখ করেছেন ভূমি মালিক। ভূমি মালিক স্বীকার করেছেন যে এফ আর টাওয়ার নির্মাণে রাজউকের নকশা ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এটা ছাড়াও বিনা অনুমতিতে উচ্চতা বাড়ানো হয়েছে বলে রাজউকের নোটিশের কথাও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহায়ণ ও গণপুর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, এফ আর টাওয়ার ভবনটিকে ১৮তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে ১৯৯৬ সালে। ২০০৫ সালে এসে রাজউকে একটা কপি দাখিল করে বলা হয় এটা ২৩ তলা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, রাজউকে যে কপি ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে তার সমর্থনে রাজউকের রেকর্ডে কোথাও কোনো তথ্য নেই। মন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।

রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, ‘রাজউকের পক্ষ থেকে ভবন সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এর সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের বের করে আইনের আওতায় আনবো। অবৈধ অংশটি ভেঙে ফেলা হবে।’

জানা গেছে, ভবনটির ২১, ২২ ও ২৩ তলা কাশেম ড্রাইসেল কোম্পানি দখল করে রেখেছে। ওই তলাগুলোতে তাদের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য ব্যারাক তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে এই কোম্পানিটি কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এ কোম্পানির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম। তাসভীর উল ইসলাম ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। কোম্পানির পরিচালকের মধ্যে আছেন ড. রেয়ান আনিস ইসলাম, নাফিসা কাশেম, সামিদ কাশেম ও তারিক আবুল আলা।

অগ্নিকান্ড ঘটনা তদন্ত করার জন্য রাজউক ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) ওয়ালিউর রহমানের নেতৃত্বে। তিনি তদন্ত কমিটির আহবায়ক। কমিটিতে আরো আছেন পরিচালক আইন, পরিচালক উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১, উপ-পরিচালক ভূমি ও উপ-পরিচালক এস্টেট-১।

ওয়ালিউর রহমান খান জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তিনিসহ কমিটির অন্য সদস্যরা এফআর টাওয়ার পরিদর্শন করে এসেছেন। যা দেখেছেন তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কমিটি আবারো ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তৃতীয় কার্য দিবসের মধ্যে রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর উপস্থাপন করা হবে।

প্রকাশ :মার্চ ৩০, ২০১৯ ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ