দেশজনতা অনলাইন ডেস্কঃ ২০১৮ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এক বছরের হিসাব করেছে সংস্থাটি। তবে সংস্থার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি মাঠে থাকা বোরো ধান।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউএসডিএ জাতীয় কৃষি গবেষণা ও তথ্য সেবা দিয়ে থাকে। সম্প্রতি ২০১৮-১৯ সালের গবেষণার তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সেখানে ২০১৮ সালের মে থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ বছরে (মে-এপ্রিল) বাংলাদেশের চালের উৎপাদন দাঁড়াবে ৩ কোটি ৪৯ লাখ মেট্রিক টন। আগের বছরের (২০১৭-১৮) একই সময় ছিল ৩ কোটি ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এক বছরের উৎপাদন বেড়েছে ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ।
২০১৮ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত এক বছরের হিসাব করেছে সংস্থাটি। তবে সংস্থার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি মাঠে থাকা বোরো ধান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোরো ধানের ফলনও ভালো হবে এ বছর।
বাংলাদেশের চাল উৎপাদনের ৪০ ভাগই আসে আমন ধান থেকে। মার্কিন কৃষি বিভাগের হিসাবে ২০১৮-১৯ বছরে আমন উৎপাদন হবে ১ কোটি ৩৫ লাখ টন। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ বর্ষে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লাখ টন। এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদন বেড়ে ৮ শতাংশ।
২০১৮-১৯ বছরে (এপ্রিল পর্যন্ত) বোরো ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ টন। আগের বছর ২০১৭-১৮ বর্ষে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৭৮ লাখ টন। উৎপাদন বেড়েছে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।
২০১৮-১৯ বছরে আউশ উৎপাদনের ফলন বেড়েছে ২ লাখ মেট্রিক টন বা ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বছরটিতে আউশের উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ টন। আগের বছর ২০১৭-১৮ বর্ষে ছিল ২৩ লাখ টন।
ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর ৫ লাখ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ বেশি করেছেন কৃষকরা।
সংস্থাটির মতে ২০১৮-১৯ বর্ষেও এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের চালের আমদানি ৬ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮তে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। আমদানি কমেছে ৪৮৩ শতাংশ।
এদিকে আমদানি কমলেও সরকারি গুদামে চালের মজুদ বেড়ে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চালের মজুদ দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন। আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন। মজুদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি বা ১০৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপাদন আর মজুদ বাড়ায় চালের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এক বছরে চালের দাম কমেছে ৯ শতাংশ।
চালের মতো উৎপাদন বাড়েনি দেশের আরেক প্রধান খাদ্য শস্য ভুট্টার। ২০১৮-১৯ বছরে এপ্রিল পর্যন্ত উৎপাদন দাঁড়াবে ৩৮ লাখ মেট্রিক টন। আগের বছর ২০১৭-১৮তে উৎপাদন হয়েছিল ৩৬ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন বেড়েছে ২ লাখ টন বা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
ইউএসডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর শীত কম থাকায় এবং বস্নাস্ট রোগের আক্রমণে কমে গেছে গমের উৎপাদন। ২০১৮-১৯ বছরে গম উৎপাদন হয়েছে ৯ দশমিক ৫ লাখ টন। আগের বছরে (২০১৭-১৮) উৎপাদন হয়েছিল ১১ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন কমেছে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছর ২ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলম বলেন, ‘আমদানিনির্ভরতা কমাতে সব ধরনের খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমরা কৃষকদের নানারকম সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এতে উৎপাদন বেড়েছে। ভবিষ্যতেও খাদ্য শস্য উৎপাদনের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’