নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশালের একটি কেন্দ্রের চিত্র (সকাল ১০টার দিকে)
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে রবিবার। একটি উপজেলায় ভোট স্থগিত হওয়ায় ১১৬টি উপজেলায় চলছে ভোটগ্রহণ। তবে গত দুইবারের মতো এই পর্বেও ভোটার উপস্থিতি কম। নির্বাচন কমিশনের নানা চেষ্টাও ভোটে আগ্রহী করে তুলতে পারেনি ভোটারদের।
রবিবার দেশের সাতটি বিভাগের ২৫টি জেলায় ভোট চলছে। এসব উপজেলায় প্রায় আড়াই কোটি ভোটারের ভোট দেয়ার কথা। তবে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকার ভোটকেন্দ্রের যে চিত্র পাওয়া গেছে তাতে ভোটের হার গত দুইবারের চেয়ে বাড়বে বলে মনে হচ্ছে না। এবারের ধাপেও গত দুইবারের মতো ভোট প্রয়োগের পরিমাণ ৪০ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘নজিরবিহীন’ কারচুপি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ প্রধান বিরোধী দলগুলো। এতে উপজেলায় ভোটের আগ্রহ অনেকটা কমে যায়। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে যে উত্তাপ থাকার কথা সেটা আর থাকেনি।
তবে এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রার্থী হওয়ায় তাদের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ বলা হচ্ছে। মূলত এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ লড়াই হচ্ছে। ফলে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের বড় কোনো অভিযোগ নেই।
গত ১০ ও ১৮ মার্চ দুই দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন। দুই ধাপের নির্বাচন অনেকটা সুষ্ঠু হলেও ১৮ মার্চের নির্বাচনে খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়িতে কেন্দ্র থেকে ফেরার পথে ভোটের দায়িত্ব থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের হামলায় সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ সাতজন নিহত হন। আহত হন আরও অনেকেই। দেশের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটেনি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়
রবিবার সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পরপর কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনিয়মে সহযোগিতার অভিযোগে এ ঘটনায় এএসপি ও ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্র দখল করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছে। এতে এক পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে।
আজকের ভোটে এখন পর্যন্ত বড়ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর না পাওয়া গেলেও কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম বলে খবর আসছে। আমাদের প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জানাচ্ছেন, কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও অনেক কেন্দ্রে ভোটারের তেমন উপস্থিতি নেই।
আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি খুবই হতাশাজনক। কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বসে বসে গল্পগুজব করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিতি থাকলেও তারাও নিরুত্তাপ ভোটে অলস ভঙ্গিতে দায়িত্ব পালন করছেন।