বিশ্বজুড়ে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে। গবেষকদের ধারণা, ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যানসারে আক্রান্তের কারণে বিশ্বজুড়ে এক ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। ক্যানসার নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। এমনই এক গবেষণায় উঠে এসেছে কিছু তথ্য। গবেষকরা বলছেন, সব ধরনের ক্যানসারের সঙ্গেই রয়েছে খাবারের নিবিড় সম্পর্ক।
১৭ দেশের ১৭০টি গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সামান্য পরিবর্তন আনা সম্ভব হলে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষায়ও উঠে এসেছে, কিছু খাবার প্রতিদিন গ্রহণ করলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। এ খাবারগুলো গবেষকরা বলছেন ‘ক্যানসার-প্রতিরোধী খাবার’। যেমন-
হলুদ-কমলা রঙের সবজি ও গাজর : এগুলোয় আছে পর্যাপ্ত বিটাক্যারোটিন, যা শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে।
টমেটো : টমেটোয় আছে লাইকোপেন। রক্তে এ লাইকোপেনের পরিমাণ কম হলে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়।
পেঁয়াজ ও রসুন : এ দুটিতে আছে ক্যানসার-প্রতিরোধক কয়েকটি উপাদান, যা খাদ্যনালি, পাকস্থলী, ফুসফুস ও যকৃতে ক্যানসারের আশঙ্কা অনেক কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে নারীদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে রসুন।
গাঢ় সবুজ শাকসবজি : এতে আছে বিটাক্যারোটিন, ফোলেট ও লিউটেইন। এগুলো দেহে ক্যানসার প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শাকসবজি যত সবুজ হবে, তাতে তত বেশি পরিমাণে ক্যানসার-প্রতিরোধী উপাদান থাকবে। বাঁধাকপি, ফুলকপি, শালগম অল্প সিদ্ধ করলে সবজির খাদ্যোপাদান ঠিক থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এগুলো নিয়মিত খেলে খাদ্যনালির ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যায়।
কম ফ্যাটযুক্ত দুধ : কম ফ্যাটযুক্ত দুধে আছে ক্যালসিয়াম, রিবোফ্ল্যাবিন, ভিটামিন-এ, সি, ডি ইত্যাদি উপাদান। এগুলো ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে দেহে কাজ করে।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলমূল : গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খেলে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমে যায়।
অধ্যাপক ডা. মো. ইয়াকুব আলী, টিউমার ও ক্যানসার রোগ বিশেষজ্ঞ