নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কূটনীতিকদের অবহিত করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই দাবি করে তিনি তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে যা হচ্ছে তা নজিরবিহীন। নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন মিলে দেশে একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে, যা দুঃখজনক’।
বুধবার গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। দুপুর আড়াইটার এ বৈঠক শুরু হয়। চলে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
বৈঠক শেষে বিকাল ৫টার দিকে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কূটনীতিকরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে প্রার্থীসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ধরপাকড়, হয়রানি এবং নির্যাতন চলছে আমরা সে বিষয়ে তাদের বলেছি। দূতাবাসের রিপোর্টেও এসব তথ্য উঠে এসেছে। তাই তারাও আমাদের সঙ্গে এসব বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেননি।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমার ওপর হামলা হতে পারে- এটা আমি ভাবতেই পারিনি।’
নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, এখানেও তিনি একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে বলে তিনি আশা করেন।
নির্বাচনী সহিংসতা বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সব দলকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা আমাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছিল, আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশের কথা বলেছিল, কিন্তু এখনও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়নি সেটা আমরা তাদের জানিয়েছি।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, তুরস্ক, ডেনমার্ক, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ ৩০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, তাবিথ আউয়াল, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, জেবা খান, আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।