এটা খুবই দুঃখজনক যে মড়কে প্রাণ ঝরছেই। কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এখন অত্যন্ত জরুরি। লোকজন বাইরে বেরিয়ে নিরাপদে যেন ঘরে ফিরতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সড়ক যেন নরকে পরিণত না হয়। যাত্রী নিরাপত্তায় এর কোনো বিকল্প নেই।
গাজীপুরে বাস-লেগুনা সংঘর্ষে পাঁচ যাত্রী নিহত হয়েছে। ফেনীতে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত হয়েছে চারজন। এ ছাড়া নোয়াখালীর সেনবাগ, পটুয়াখালীর গলাচিপা, কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ফরিদপুরে আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে গত সোমবার।
এটা খুবই দুঃখজনক যে, অনেক চেষ্টার পরও সড়কে নিরাপত্তা ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে পারছে না সরকার। জোরালো অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন আইন ও নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর একচেটিয়া প্রাধান্যের কারণেই এই খাতে শৃঙ্খলা আসছে না।
এটা সত্যি যে, সড়ক দুর্ঘটনা এতটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে যে, তা দেশের প্রতিদিনের দুর্ঘটনার চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। সড়ক দুর্ঘটনারোধে যাত্রী কল্যাণ সমিতি কয়েকটি সুপারিশ করেছিল। সুপারিশগুলো হলো, সড়ক দুর্ঘটনাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জরুরিভিক্তিতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে মালিক-শ্রমিক-যাত্রী-সরকার মিলে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ, ফিটনেসবিহীন মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন উচ্ছেদ করে মানসম্মত যানবাহনের ব্যবস্থা, চালকদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, চালকদের হাতে দৈনিক চুক্তি ভিক্তিক বাস, ট্রাক, হিউম্যান হলারসহ অন্যান্য যানবাহন ইজারা দেয়া বন্ধ, দেশের সব বেহাল সড়ক-মহাসড়ক সংস্কার, ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত, বিআরটিএকে শক্তিশালীকরণ, পরিবহন খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং ফুটপাত নিমার্ণ ও সংস্কারসহ ফুটপাত দখল মুক্ত করে হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত করা।
এটা খুবই দুঃখজনক যে, অনেক চেষ্টার পরও সড়কে নিরাপত্তা ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে পারছে না সরকার। জোরালো অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন আইন ও নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর একচেটিয়া প্রাধান্যের কারণেই এই খাতে শৃঙ্খলা আসছে না। এছাড়া সরকার, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন একাকার হয়ে গেছে। ফলে সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। আইন আছে কিন্তু এর প্রয়োগ করতে গেলেই বাধা আসে। এরফলে রক্ষা হচ্ছে না যাত্রীস্বার্থ। অকাতরে প্রাণ যাচ্ছে সড়কে। তাহলে নিরাপদ সড়ক কি অলীক কল্পনার বিষয় হয়েই থাকবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কারণে প্রতিবছর দেশের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ শতাংশ। যানবাহনের উচ্চগতি, নাজুক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সমস্যা, পরিকল্পনা ও নীতির দুর্বলতা, অসচেতনতা ইত্যাদি বিষয় সড়ক দুর্ঘটনা ত্বরান্বিত করছে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কর্তৃপক্ষকে সেসব সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আমরা এ ধরনের করুণ মৃত্যু আর দেখতে চাই না। প্রতিটি সড়ক-মহাসড়ক হোক নিরাপদ-এটাই সকলের কাম্য।