২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:৫৮

‘নেতাও নেই মাথাও নেই, এই দলকে কে ভোট দেবে?’

ড. কামাল হোসেনকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘নামকাওয়াস্তে নেতা’ বলে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ড. কামাল হোসেন নামকাওয়াস্তে নেতা। এখন মনের দুঃখে হয়তো নির্বাচনও করছেন না। নেতাও নেই মাথাও নেই। এই দলকে কে ভোট দেবে?’

মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

সরকারের ইশারায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিএনপি নেতাদের মনোনয়ন বাতিল করছে বলে দলটির তরফ থেকে অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার কেন করবে? নির্বাচন কমিশন কি সরকার? নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়াটাই একটা পুতুল নাচ মন্তব্য করে কাদের বলেন, পুতুল নাচের খেলা যেমনি নাচাও তেমনি নাচে, পুতুলের কি দোষ? লন্ডন থেকে লাটাইয়ের রশি টানছে আর ছাড়ছে। এটাতো টেমস নদীর ওপার থেকে হচ্ছে। ড. কামাল হোসেন সাহেবতো নামকাওয়াস্তে নেতা। এখন মনের দুঃখে হয়তো নির্বাচনও করছেন না। নেতাও নেই মাথাও নেই। এই দলকে কে ভোট দেবে? মানুষ জিজ্ঞেস করবে আপনাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবে? কী জবাব দেবেন (বিএনপি মহাসচিব) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর? আজ পর্যন্ত জনগণের সেই প্রশ্নের জবাব দেননি। পৃথিবীর সব দেশে নির্বাচনে প্রত্যেকের একজন নেতা থাকে, পিএম ফেস থাকে। তাদের প্রধানমন্ত্রী ফেস নেই।

সরকারের ইশারায়ই মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিল ইসি নিচ্ছে না বলে অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, সরকারের সঙ্গে আপিলের কী সম্পর্ক? এটাতো নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বিষয়, এখানে সরকারের কী ভূমিকা? যখন নির্বাচন কমিশন তাদের পক্ষে নেই তখন কমিশন সৎ মা হয়ে যাবে। তাদের পক্ষে না থাকলে সবকিছুই উল্টা। ইসি যদি গ্যারান্টি দিতে পারে আগামী নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হবে, তাহলেই কেবল সৎ মা আপন মা হয়ে যাবে।

মনোনয়ন নিয়ে ইসি পতুল নাচ খেলছে বলে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদের মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রিজভীর বক্তব্যের জবাবতো আমি দেবো না। তার জন্য আমাদের হাছান (ড. হাছান মাহমুদ) আছেন। পল্টনে তাদের গুজবের ফ্যাক্টরি আছে। গুজবের ফ্যাক্টরিতে বসে অপপ্রচারের ভাঙা রেকর্ড বাজানো হচ্ছে। মিথ্যাচার আর গুজবের ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছে। এতেও কোনো কাজ হবে না। মানুষ বুঝতে পেরেছে।

পাবনায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব সামাজিক ঘটনা ঘটতে পারে। দেখুন নরসিংদীতে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, সেটাকে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের কোন্দল। নরসিংদীতে ৫০ বছর ধরে সামাজিক দ্বন্দ্ব, পাবনায়ও সেরকম কিছুই হতে পারে। দলীয় সমর্থকদের কারণে ঘটেছে এ ধরনের কোনো রিপোর্ট দেখিনি।

আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে মহাজোটের প্রার্থী ঠিক হয়ে যাবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থী আমাদের অধিকাংশ ঠিক হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। জোটের মেরুকরণ দুই তিন দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। আমরা একক প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছি। এখন ক্ষোভ-বিক্ষোভতো থাকবেই। সেটার জন্যও কমিটি করে ফেলছি। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

জোটের পাশাপাশি আওয়ামী লীগেরও বিদ্রোহী প্রার্থী রাখার একটা ইঙ্গিত শোনা যাচ্ছে- এমন কথার জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শরিকদের সঙ্গে প্রতারণামূলক কোনো বিষয় আমাদের নেই। এটা আমরা করতে পারি না। তাহলে আমাদের কে বিশ্বাস করবে? আমাদের শরিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া আছে। নিজেদের মধ্যে টানাপোড়েন নেই, সংশয়-সন্দেহ নেই। আমরা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। আমরাতো বানরের পিঠা ভাগের মতো রাজনীতি করি না। এই নীতি নিয়েতো নির্বাচন করছি না। আমরা নির্বাচন করছি জেতার জন্য, জোটও করছি জেতার জন্য, কাজেই তাকেই প্রার্থিতা দেওয়া হবে যিনি বিজয়ী হতে পারবেন।

মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব বদলের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি জেনারেলের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, এটা নির্বাচন কমিশনের আইন নিয়ম কানুনে। তাকে মহাসচিবের পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটাও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাহেবের সিদ্ধান্তে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই আমাদের কিছু করণীয়ও নেই।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৪, ২০১৮ ৭:৪২ অপরাহ্ণ