শাহরুখ খানের নতুন ছবি ‘জিরো’র সামনে ঘোরতর বিপদ। শিখ ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছবিটির বিরুদ্ধে। এবার সেই অভিযোগ খণ্ডাতে আদালতে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে পরিচালককে। এই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে কি বাঁচবে ‘জিরো’, নাকি জিরো হবে সব চেষ্টা? বৃথা যাবে বহুল প্রতীক্ষিত ছবির সব আয়োজন, কিংবা ছেঁটে ফেলতে হবে কোনো দৃশ্য?
শিখ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে কিছুদিন আগে শাহরুখ খানের বিরুদ্ধে দিল্লিতে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ছবির একটি দৃশ্যে শাহরুখকে অন্তর্বাস পরা অবস্থায় কাঁধে শিখদের পঞ্চ ‘ক’-এর অন্যতম কৃপাণ (ছোট ছুরি) ধারণ করতে দেখা গেছে। গলায় ৫০০ রুপির মালা এবং কাঁধে কৃপাণের সেই দৃশ্য থেকে তৈরি হয়েছে ‘জিরো’ ছবির পোস্টার। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি শিখ সম্প্রদায়। দিল্লির শিখ গুরুদুয়ারা প্রবন্ধক কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি অভিযোগ করেন, শিখ ধর্মের রীতি অনুযায়ী কেবল ‘অমৃতধারী’ শিখেরাই কৃপাণ ধারণ করতে পারেন। ‘জিরো’ ছবিতে আপত্তিকরভাবে সেটি দেখানো হয়েছে। এ ঘটনা তাঁরা মেনে নেবেন না। বেশ কয়েকটি শিখ সংগঠন এ অভিযোগ এনেছে।
বিধানসভার আকালি দলের সদস্য মঞ্জিদার সিং সিরসা এ নিয়ে টুইটারে লিখেছিলেন, শাহরুখ খান, ছবির প্রযোজক গৌরী খান ও পরিচালক আনন্দ এল রাই যদি অনতিবিলম্বে ‘জিরো’ ছবির এই পোস্টার প্রত্যাহার না করেন এবং ছবি থেকে আপত্তিকর এ দৃশ্য বাদ না দেন, তাহলে ছবির সঙ্গে যুক্ত সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছবি মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহের সামনে বিক্ষোভ করবে শিখ সম্প্রদায়।
গত শুক্রবার শাহরুখের বিরুদ্ধে মামলার এক শুনানিতে বোম্বের উচ্চ আদালতে যান নির্মাতা আনন্দ এল রাই। আদালতকে তিনি বলেন, পোস্টার ও ট্রেলারে দেখানো শাহরুখ খানের শরীরে ঝোলানো জিনিসটি কৃপাণ নয়, তলোয়ার। শাহরুখের পক্ষের আইনজীবীও পরিচালকের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এক মামলায় আইনজীবী অমৃতপাল সিংয়ের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বি পি ধর্মাধিকারী ও এস ভি কাতওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ এ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলায় দাবি করা হয়, ‘জিরো’ ছবির পোস্টার এবং ছবি থেকেও আপত্তিকর ওই দৃশ্য বাদ দিতে হবে। এমনকি ভারতের কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডকে ছবিটিকে ছাড়পত্র না দেওয়ার আহ্বান জানানো, এমনকি দেওয়া হলে সেটা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
আদালত ছবিটির ছাড়পত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সেটি স্থগিত রয়েছে। তা ছাড়া সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়া ট্রেলারটি পোস্টারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আদালত ছবিটি মুক্তির সনদ দেওয়ার আগে এর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি ধর্মাধিকারী জানিয়েছেন, ‘সেন্সর বোর্ডের যাচাই-বাছাইয়ের আগে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
১৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। ছবিটি মুক্তির কথা রয়েছে ২১ ডিসেম্বর। ডেকান ক্রনিকল।