প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা পাকের ওপর নির্মিত মসজিদে নববির সবচেয়ে বড় সবুজ গম্বুজ। এটি মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে ঝড়তোলা স্থাপনা।
এ গম্বুজটি কিংবা গম্বুজের ছবিটি দেখলেই মুমিন-মুসলমান, আশেকে রাসুলগণ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা পাকের কল্পনা করেন। মসজিদে নববির এ বড় সবুজ গম্বুজটির এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা অনেকেরই অজানা। যা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
> গম্বুজ বিহীন প্রিয়নবির সমাধিস্থল
৬৭৮ হিজরির আগে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমাধির ওপর কোনো গম্বুজ ছিল না। ৬৭৮ হিজরি সনে আল-নাসির হাসান ইবনে মুহাম্মদ কালায়ুন সর্ব প্রথম প্রিয়নবির সমাধিস্থলের ওপর গম্বুজ নির্মাণ করেন। যা কাঠ দ্বারা নির্মিত ছিল।
> গামবাদ ই খাজরা বা সবুজ গম্বুজ
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমাধিস্থলের ওপর নির্মিত গম্বুজটি গামবাদ ই খাজরা নামেও পরিচিত। আগের যুগের সম্ভ্রান্ত শ্রেণির মানুষ নিজেদের কিংবা নিজেদের প্রিয়জনদের সমাধিস্থল সোনা-রূপা, হিরা-জহরতের সমন্বয়ে কারুকার্য করে সাজিয়ে রাখতো।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমাধি স্থলের ওপর নির্মিত গম্বুজ সে অর্থে সাধারণ গম্বুজ হিসেবে নির্মিত। তাতে সেভাবে কোনো কারুকার্য করা হয়নি।
সবুজ গম্বুজের নিচে অবস্থিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমাধিটি ২ হাত প্রশস্ত ও ৪১ ইঞ্জি উচ্চতা।
> গম্বুজে অগ্নিকাণ্ড
১৪৮১ সালে ৯০০ হিজরির শুরুর দিকে মসজিদে নববির এ গম্বুজটিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সে সময় পুরো গম্বুজটিই পুড়ে যায়। যার ফলে মসজিদের ভেতরের প্রাচীরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা পরে পুনর্গঠন করা হয়।
> গম্বুজে জানালা
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমাধিস্থল বরাবর মসজিদে নববির এ গম্বুজে একটি জানালা রয়েছে। অনেকে গম্বুজের এ স্থানটির বা চিহ্নটি সম্পর্কে ভিত্তিহীন গল্প বলে থাকে যে, কেউ গম্বুজটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। মূলত এ জানালাটি গম্বুজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই রাখা হয়েছে।
> গম্বুজের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা
অনেকেই হয়ত মনে করে থাকনে যে, সাধারণ লোকদের দিয়েই মসজিদে নববির বড় গম্বুজটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। আসলে তা সত্য নয়। বরং এ গম্বুজটি পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতার কাজে সুনির্দিষ্ট বিশেষ কিছু লোক রয়েছে। যারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা পাকের ওপর অবস্থিত বড় গম্বুজটি পরিস্কার করে থাকেন। এ লোকদেরকে ‘ইউনুস’ বলা হয়। এ গম্বুজ পরিচ্ছন্নতায় এখনো পাঁচ জন ইউনুস নির্ধারিত রয়েছে।
> গম্বুজের রং
মসজিদ ই নবাবির গম্বুজটি শুরুতে থেকে সবুজ ছিল না। কাঠ দ্বারা নির্মিত গম্বুজটি প্রথমে বাদামি রঙের ছিল। কিছুকাল পরে এটি সাদা রঙে পরিবর্তন করা হয়। তারপর গম্বুজটিতে নীল ও বেগুনি রঙ ব্যবহার করা হয়।
১২৫৩ হিজরিতে অটোমান সুলতানের নির্দেশে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা পাকের ওপর নির্মিত বড় গম্বুজটিতে সবুজ রঙ ব্যবহার করা হয়। যা আজও বিদ্যমান।