হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আগামী বছর (২০১৯) থেকে মক্কা মদিনায় বাংলাদেশ হেলথ ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। চলতি বছর পর্যন্ত মক্কা ও মদিনায় একটি করে হেলথ ক্লিনিক চালু থাকলেও ২০১৯সাল থেকে দুটি স্থানে একাধিক হেলথ ক্লিনিক চালু হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে আগামী বছর মক্কাতে কমপক্ষে চারটি হেলথ ক্লিনিক থাকবে।হজ যাত্রীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার নার্স ও স্বাস্থ্য সহকারীসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।
রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালায় বক্তৃতাকালে ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান এ তথ্য জানান।
কর্মশালায় ২০১৮সালের হজ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৮ সালে মক্কা ও মদীনায় স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ জন চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। ২০১৬ ও ২০১৭ সালের চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬৪ হাজার ৫৭ জন ও ৯৪ হাজার ১৮০ জন।
মক্কা ও মদিনার স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে হজযাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা, বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ, জটিল রোগীদের সৌদি হাসপাতালে প্রেরণ, ভর্তি রোগীদের তত্ত্বাবধান, মৃত্যুবরণকারী হজযাত্রীদের দাফন ও অসুস্থ হজযাত্রীদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
কর্মশালায় জানানো হয়, ২০১৮ সালে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজযাত্রীর মধ্যে ১৪৫ জন হাজি মারা যান। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৫২ ও ২০১৬ সালে সংখ্যা ৮৫ জন।
মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে ২০১৮সালে মক্কা-মদিনায় মারা যাওয়াদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে ৬৯ জন, হিট স্ট্রোকে ৪ জন, ব্রেন স্ট্রোকে ৬ জন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ৭ জন, কিডনি জটিলতায় ৭ জন, শ্বাসকষ্টে ১৪ জন,নিউমোনিয়ায় ১ জন, মানসিক রোগে ১জন, খাদ্যনালী ও লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় ৩ জন, দুর্ঘটনায় ২ জন ও অন্যান্য কারণে ৩১ জন মারা যান।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, হজের সময় লক্ষাধিক বাংলাদেশির স্বাস্থ্য সেবায় মক্কা ও মদিনায় একটি করে হেলথ ক্লিনিক খুবই অপ্রতুল।
তারা জানান, প্রতিবেশী দেশ ভারতের হজ যাত্রীদের সেবা দিতে শুধুমাত্র মক্কাতেই প্রায় ৪০টি হেলথ ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের মাত্র একটি হেলথ ক্লিনিকে অসংখ্য রোগীর স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে চিকিৎসক নার্স ও সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হয়।
সার্বিক বিবেচনায় মক্কা ও মদিনায় হেলথ ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানান ধর্মসচিব আনিসুর রহমান।