ঝালকাঠির রাজাপুরে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে দিয়ে প্রক্সি দেয়ানোর অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার (২৫ নভেম্বর) রাজাপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ৩০নং রাজাপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শেণির ছাত্রী সুরভী আক্তার পারিবারিক কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানম তার বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শামীমা আক্তারকে দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করান। খবর পেয়ে গোয়েন্দা সংস্থার একটি টিম পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে। কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কেন্দ্র সচিব মাহমুদা খানম প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরটি কেটে অনপুস্থিত দেখান।
পরে গোয়েন্দা সংস্থা শামীমার ছবি প্রদর্শন করলে শমীমাকে সুরভী দাবি করে মাহমুদা বলেন, অসুস্থতার কারণে সে পরীক্ষায় অনুপস্থিত রয়েছে। এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা কেন্দ্র থেকে বের হয়ে ছবি নিয়ে শামীমার বাড়িতে উপস্থিত হলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা স্বীকার করে শামীমা (কথিত সুরভী) জানায়, সে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।
শামীমার ভাই গোয়েন্দা সংস্থাকে জানায়, শামীমা রাজাপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ‘খ’ শাখার (রোল নং ৩৫) ছাত্রী। শামীমা উপজেলার ডিগ্রি কলেজ এলাকার মো. শামীম মৃধার মেয়ে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন সম্পর্কে শামীমার চাচি।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীর কাছে শামীমার ছবি দেখালে তারা নিশ্চিত করে প্রক্সি দেয়া পরীক্ষার্থীই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শামীমা।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ৩০নং রাজাপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানম তার বিদ্যালয় থেকে শতভাগ পাস দেখিয়ে পুরস্কার নিয়ে থাকেন। চলমান পরীক্ষায় সুরভী অংশগ্রহণ না করায় শতভাগ পাস না হওয়ার আশঙ্কায় তিনি এ আয়োজন করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান।
এ ব্যাপারে শামীমার বাবা শামীম মৃধা জানান, চলমান পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের একটি মেয়ে অনুপস্থিত থাকায় মাহমুদা ভাবি আমার মেয়েকে দিয়ে পরীক্ষা দেয়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আলমগীর জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে টিম গঠন করে তদন্তে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একই আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ বেগম পারুলও।