ক্রাইমিয়ার উপদ্বীপে ইউক্রেনের নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ জব্দ করেছে রাশিয়া। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নিয়েছে। বেশ কয়েকজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় দুই দেশই একে-অন্যকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে।
রাশিয়ার দাবি, রোববার ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ ক্রিমিয়ার সমুদ্রসীমায় ঢুকে পড়ে। এর মাধ্যমে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশনের ১৯ ও ২২ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছে ইউক্রেন। তাই তাদের জাহাজগুলো আটকে দিয়েছে রুশ নৌবাহিনী।
অন্যদিকে ইউক্রেনের নৌবাহিনী দাবি করেছে, রাশিয়ার সীমান্তরক্ষীরা কৃষ্ণসাগরে তাদের একটি টাগবোটে হামলা চালিয়েছে যা প্রকাশ্য আগ্রাসী তৎপরতা। দুটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি টাগবোট আযোভ সাগরের মারিওপোল বন্দরে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা করে রুশ সীমান্তরক্ষীরা। রাশিয়া ওই এলাকাতে দুটো যুদ্ধবিমান এবং দুটো হেলিকপ্টার ডেকে আনে। তারা দাবি করে, নৌযানগুলা অবৈধভাবে তাদের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল এবং ওই পথে চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে নিরাপত্তার কারণে।
ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সদস্যরা জানান, জাহাজগুলো হামলার মুখে পড়লে তারা ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তাদের ছয়জন নাবিক আহত হয়েছে বলেও জানানো হয়।
তবে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সীমান্তরক্ষা বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের জাহাজের আগ্রাসী তৎপরতার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে মস্কো।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা অবশ্য পরে নিশ্চিত করে যে, তাদের একটি টহল জাহাজ তিনটি ইউক্রেনের জাহাজ জব্দ করেছে। তবে কেবল তিনজন নাবিক আহত হয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পোরোশেংকো পার্লামেন্টে সোমবার সামরিক আইন জারির জন্য আহ্বান জানাবেন বলে ঘেষণা দিয়েছেন।
কয়েক মাস ধরেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। ২০০৩ সালে চুক্তি অনুসারে মস্কো এবং কিয়েভ কের্চ স্ট্রেট এবং আযোভ সাগরের আঞ্চলিক পানি ভাগাভাগি করবে। কিন্তু সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনের বন্দর হতে আসা বা তার উদ্দেশে যাত্রা করা সমস্ত নৌযান পরিদর্শন শুরু করে। রাশিয়র এই আচরণে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কের্চ স্ট্রেট-এ চলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি ‘চরম’ সংযমের সাথে যেকোনো কাজ করার জন্য সবাইকে তাগিদ দিয়েছে।
ন্যাটো বলেছে, তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে এবং এর আঞ্চলিক অখণ্ডতা, আঞ্চলিক জলসীমায় তার ন্যাভিগেশন অধিকারকে সমর্থন দেয়। ন্যাটো মনে করে, ইউক্রেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের অনুরোধ করেছে এবং মস্কোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি করেছে।